অলিস্টাফ করেসপন্ডেন্ট,ঢাকা:প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে এলডিপি’র সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি, এখনো বহাল তবিয়তে আছে নবম জাতীয় সংসদ। প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করে সবদলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করুন।

এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আপনার এবং আ’লীগের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। আশাকরি, এই প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করার বিষয়ে ৩ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশ্যে, দেয়া ভাষণে আপনার পক্ষ থেকে একটি ঘোষণা আসবে।

বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,  এই চলমান নির্বাচন বন্ধ করলে আপনার ও আ’লীগের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন হবেনা, বরং গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে। নির্বাচন বন্ধ করার ব্যাপারে সংবিধানে কোনো বাধা নেই।

সকল রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি পদ্ধতি বের করে, নতুন ভাবে নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আপনার পক্ষে এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়।

কর্নেল অলি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত পাঁচ বছরে, বিশেষ করে ২০১৩ সালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেকগুলি রেকর্ড ভঙ্গ করেছে, যেমন- নির্বিচারে বিরোধী দলের এবং সাধারণ মানুষের উপর সরকারি বাহিনী দ্বারা গুলি বর্ষণ, হত্যা, গুপ্ত হত্যা, গুম, নির্যাতন, নিপীড়ন, সামাজিক অনাচার-অবিচার এবং সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ।

মানবাধিকার, ন্যায় বিচার, সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা আজ ভুলন্ঠিত। পক্ষান্তরে সমগ্র দেশ এক ধরনের রাজতন্ত্রের দ্বারা শাসিত হচ্ছে। নেতাদের মুখে কোনো লাগাম নাই। যত্রতত্র মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে, দেশের মানুষের কাছে রাজনীতি এবং রাজনীতিবীদদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ক্রমশ দেশের মানুষ রাজনীতি এবং রাজনীতিবীদদের ঘৃনা করতে শুরু করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে অবগত আছেন। দেশ এক চরম সংকটের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থা কারো কাম্য নয়। বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে আপনার দল এবং দেশের জন্য আরো বিপর্যয় ডেকে আনবে।

জেদাজীদি করে কখনো কোনো সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। দেশের অবস্থা উপলব্ধি করুন। দেশ এবং দেশের মানুষকে কিভাবে সুশাসন, ন্যায় বিচার, মানবাধিকার এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন, সে ব্যাপারে আপনাকে গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। ত্যাগের মাধ্যমে মানুষ মহান হয় এবং ইতিহাসে নিজের জন্য জায়গা করে নেয়। ধ্বংসের মাধ্যমে নয়। সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে নয়। জনগণকে কষ্ট দিয়ে নয়। স্থীতিশীলতা নষ্ট করে নয়।

কর্নেল অলি প্রথানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, দেশের মিল কলখানা প্রায় বন্ধ। ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা এবং সর্বপরি অর্থনীতিতে বিপর্যয়। খেটে খাওয় মানুষের আর্তনাদ। আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে যে, পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও এ সংকট থেকে বের হওয়া সম্ভব হবেনা।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৪১ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে এবং আমার জানামতে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত পার্টিসহ প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী সংখ্যা মাত্র ৭২৮ জন। অতীতে কোনো নির্বাচনে (১৯৭৪ সাল ছাড়া) কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু সকল প্রার্থী আপনারই সমর্থিত দলের, সুতরাং এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের কোনো ভুমিকাও নাই। এছাড়াও নির্বাচন কমিশন সরকারের একটি আজ্ঞাবহ সংস্থা যা বিগত দিনে তারা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করেছে।

কর্নেল (অব.) অলি আহমদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, নিজের সুনাম বৃদ্ধি করুন, দেশের মর্যাদা রক্ষা করুন। জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করুন। অতীতের সকল গ্লানী মুছে ফেলে, আসুন সকলে মিলে নতুন বছরে নতুন ভাবে যাত্রা শুরু করি।