ঢাকা: দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আগামী ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে আলোচনার মাধ্যমে সকল দলের অংশ গ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে  উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন দেশের পেশাদার সাংবাদিক সমাজ।

তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতার মাধ্যমে দেশের জনজীবনে স্বাভাবিকতা নস্যাতের অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকতেও সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানান। শুক্রবার দেশের ৩ হাজার ২০০ সাংবাদিক এক যুক্ত বিবৃতিতে এই আহবান জানান। বিবৃতিদাতারা সবাই আওয়ামীপন্থি সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মহাসচিব আবদুল জলিল ভূইয়্রা পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, দেশ যখন মুক্তিযুদ্ধের ধারায় এগিয়ে চলেছে, স্বাধীনতার চার দশক পরে ১৯৭১ সনের যুদ্ধাপরাধীদের আইনের আওতায় এনে যখন তাদের বিচার এবং বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে,

জাতি যখন কলংকমুক্ত হচ্ছে, গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারের নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়ণের দৃশ্যমান ধারাবাহিকতা নিয়ে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করছে, সে সময় দেশকে গভীর এক সংকটের দিকে ঠেওে দেয়ার চেষ্টায় মেতে ওঠেছে বিশেষ মহল। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী চিহ্নিত ধর্ম ব্যবসায়ী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে তথাকথিত জাতীয়তাবাদী ধারার এই শক্তি তাদের দেশী-বিদেশী দোসরদের সহায়তায় আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশকে অন্ধকার এক জগতে নিয়ে যেতে চায়।

সে জন্যই তারা আঘাত করতে চায় আমাদের পবিত্র সংবিধানকে, তারা হত্যা করতে চায় আমাদের পবিত্র সংবিধানের অন্যতম মূল স্তম্ভ গণতন্ত্রকে। গণতান্ত্রিক অর্জনকে নস্যাৎ করে তারা দেশের চালিকা শক্তির আসনে বসাতে চায়  অনির্বাচিত শক্তিকে। দেশপ্রেমিক পেশাদার সাংবাদিক সমাজ এই চক্রান্তের বিরূদ্ধে সোচ্চার ও সক্রিয় হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

সাংবাদিক সমাজ মনে করে বার বার আহবান সত্ত্বেও সংবিধান নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে জাতীয় সংসদেও বিরোধী দল দেশে সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে শুধু বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টাই করে নি, তারা গণতন্ত্রকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়ার চক্রান্তে মেতে ওঠেছে। তাদের এই অশুভ লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে তারা গোটা দেশবাসীকেই জিন্মি করেছে। তাদের এই সহিংসতার বলি হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ।

বিবৃতিতে সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিক সমাজ এই পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তারা বলেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে  একাদশ নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া যায়।

তারা বলেন, সাংবিধানিক ধারা ক্ষুণ্ণ করে অন্যকোনো পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা দেশের ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করতে পারে, যা একটি গণতন্ত্রকামী স্বাধীন দেশের জন্য কখনই কাম্য হতে পারে না। দেশপ্রেমিক, সচেতন ও দায়িত্বশীল সকল মহল এ বিষয়টি অনুধাবন করবেন বলে সাংবাদিক সমাজ প্রত্যাশা করে। সাংবাদিক সমাজ মনে কওে, রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে আলোচনাই একমাত্র পথ। সন্ত্রাস, সহিংসতা, হত্যা, সম্পদ ধংস, প্রাণহানি বা অরাজকতা তার কোনো বিকল্প হতে পারে না ।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন: গোলাম সারোয়ার, হাবিুবর রহমান মিলন, রাহাত খান, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, এম শাহজাহান মিয়া, শফিকুর রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, শ্যামল দত্ত, স্বদেশ রায়, নইম নিজাম, সাইফুল আলম,  মনজুরুল আহসান বুলবুল, আবদুল জলিল ভূঁইয়া, আলতাফ মাহমুদ, ওমর ফারুক, শাবান মাহমুদ. মোল্লা জালাল,  ফরিদ হোসেন, ড.উৎপল কান্তি সরকার, আবু তাহের মোহাম্মদ,মামুন রেজা, প্রদীপ ভট্টাচার্য শংকর, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, আসিফ সিরাজ, ফরাজী আহমদ সাইদ বুলবুল, শাহাদৎ হোসেন শাহ,

খায়রুজ্জামান কামাল, কাজী রফিক, মধুসূদন মন্ডল, রফিকুল ইসলাম সবুজ, আবদুল মান্নান, শহীদ উল আলম, রিয়াজ হায়দার, আনোয়ারুল ইসলাম কাজল , মাহবুবুর রহমান সোহাগ, আকবারুল হাসান মিল্লাত,  মামুনুর রশিদ,  এ ইচ এম আখতারুজাজামান, আরিফ রেহমান, ওয়াহিদুর আলম আর্টিস্ট , মোঃ শাহীন হোসেন,  সাজ্জাদ গণি খান রিমন, সাকিরুল কবির রিটন, কাজী ইয়াসিন, আতাউল করিম খোকন,  নাফিজ আশরাফ, আফজাল হোসেন পন্টি ,

আবু তাহের চৌধুরী ও  জাহেদ সারোয়ার সোহেল ,মোহাম্মদ ফারুক, দিদারুল আলম, হুমায়ুন কবির, সাহেব আলী, জাহিদুল কবির মিল্টন, গোপীনাথ দাস,সমুদ্র হক, আরিফ রহমান, প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, মুজিবুল হক, আমেদাদুল হক, রেজাউল করিম, কাজী গিয়াস, জাভেদ অপু,  নিয়ামুল কবির সজল, মীর গোলাম মোস্তফা, আবদুস সালাম, আহসান সাদিক, ফরিদা ইয়াসমিন, মাইনুল আলম, শাসুদ্দিন আহমদ চারু, সালিম সামাদ, আহসান আমীন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২ জানুয়ারি ১৮ দল পন্থি ১০০১ জন সাংবাদিক এক যুক্ত বিবৃতিতে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ধরে নেয়া যায় শুক্রবারের আওয়ামীপন্থি সাংবাদিকদের এই বিবৃতি বৃহস্পতিবারের বিবৃতির কাউন্টার।