দশম নির্বাচন আহসান আমীন, ফয়েজ মাহমুদ ঢাকা: নানা জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে আবারও নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আ’লীগ সরকার বিজয় লাভ করছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়জয়কার।

বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ আগেই ১২৭টি, জাতীয় পার্টি ২০টি, জাসদ ৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ২টি এবং অন্যান্য দল ১টি পায়।

এরমধ্যে রবিবার ১৪৭টি আসনে নির্বাচিত হয়। এদের মধ্যে যারা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৭৮ আসনে, জাতীয় পার্টি ১১ আসনে, স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯ আসনে, জাসদ ২ আসনে, ওয়ার্কার্স পার্টি ৪টি আসনে জয়লাভ করেছে।

ইতিমধ্যে যেসব আসনের বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই বেশির ভাগ আসনে জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে এই নির্বাচনে মহাজোট সরকারের বৃহৎ শরিক এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টির অনেক প্রার্থীও জিতেছেন।

আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও অনেকে জিতেছেন। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীদের সকলেই জয়ী হয়েছেন।  তবে ঢাকা-৭ আসনে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহীউদ্দিন। ঢাকা-১ আসনেও হেরে গেছেন বর্তমান সরকারের সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান।

ঢাকা ১ আসনে জিতেছেন জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম। হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান খান। ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, ঢাকা-৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী মো. সেলিম  জয়ী হয়েছেন। হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। ঢাকা-১৫ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার।

চট্টগ্রামের আসনগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-৯ আসনে জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু,  ১১ আসনে আওয়ামী লীগের এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম-১২ আসনে সামসুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী জিতেছেন।

রংপুর-৬ আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়ী হয়েছে, হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নুর আলম। গোপালগঞ্জ-৩ আসনেও জিতেছেন শেখ হাসিনা।

লালমনিরহাট-১ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ আওয়ামী লীগের মো. মোতাহার হোসেনের কাছে হেরে গেছেন। যদিও এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচনে ছিলেন না।
বরং তিনি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা তদেয়ার পর থেকেই সিএমএইচ হাসপাতালে ‘আটক’ আছেন। তবে লালমনিরহাটে হেরে গেলেও রংপুর-৩ আসনে এরশাদ জিতেছেন।

দেশের অন্যান্য আসনে যারা জিতেছেন তাদের মধ্যে রংপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের টিপু মুনশি জয়লাভ করেছেন। হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির মো. করিম উদ্দিন ভরসা।

দিনাজপুর-৬ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের মো. শিবলী সাদিক, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রবীন্দ্র নাথ সরেন (ওয়ার্কার্স পার্টি—হাতুড়ি)। বগুড়া-৪ আসনে জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম জিতেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের মুহা. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, রাজশাহী-৬ আসনে জিতেছেন আওয়অমী লীগের শাহরিয়ার আলম। সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের আ. মজিদ মণ্ডল। ঝিনাইদহ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল হাই,

ঝিনাইদহ-২ আসনে আওয়ামী লীগের মো. সফিকুল ইসলাম, মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মকবুল হোসেন  জয়ী হয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার, নড়াইল-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান জিতেছেন। সাতক্ষীরা-১ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ  জিতেছেন।

বরিশাল বিভাগের বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং বরগুনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের শওকত হাচানুর রহমান জিতেছেন। পটুয়াখালী-৩ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন।

ভোলা-২ আসনে আওয়ামী লীগের আলী আজম জিতেছেন। হেরে গেছেন জাতীয় পার্টি-জেপির মো. ছালাউদ্দিন। ভোলা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন জয়ী হয়েছেন। হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির  এ কে এম নজরুল ইসলাম মিয়া।

বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগের তালুকদার মো. ইউনুস এবং বরিশাল-৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান জয়ী হয়েছেন। হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের পংকজ দেব নাথ জয়লাভ করেছেন। ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের বজলুল হক হারুন জয়ী হয়েছেন, হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির মো. নাসির উদ্দীন ।

টাঙ্গাইল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মো. ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল-৬ আসনে আওয়ামী লীগের খন্দকার আবদুল বাতেন, জামালপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ জয়ী হয়েছেন।

মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর, শেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মো. আতিউর রহমান, শেরপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের  মতিয়া চৌধুরী জয়ী হয়েছেন। তার সঙ্গে হেরে গেছেন  স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউজ্জামান বাদশা।

ময়মনসিংহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মজিবুর রহমান ফকির, ময়মনসিংহ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মো. মোসলেম উদ্দিন, ময়মনসিংহ-৭ আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান, ময়মনসিংহ-১০ আসনে আওয়ামী লীগের ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল জিতেছেন।

নেত্রকোনা -২ আসনে আওয়ামী লীগের আরিফ খান জয়, নরসিংদী-১ আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জিতেছেন। হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ মোস্তফা জামাল।

নরসিংদী-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আশরাফ খান জয়ী হয়েছেন। হেরে গেছেন নৌকা প্রতী নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জাসদের প্রার্থী জায়েদুল কবির। নরসিংদী-৩ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের জহিরুল হক ভুঞা মোহন। মানিকগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের এ এম নাঈমুর রহমান জয়ী হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু জয়ী হয়েছেন। হেরে গেছেন স্বতন্ত্র মিজানুল হক। গাজীপুর-৪ আসনে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সিমিন হোসেন রিমি।

সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মুহিবুর রহমান মানিক জয়লাভ করেছেন।

সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির মো. ইয়াহইয়া চৌধুরী এবং সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ  জিতেছেন।

মৌলভীবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের মো. শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-২ আসনে জাতীয় পার্টির  মহিবুল কাদির চৌধুরী জিতেছেন।

হবিগঞ্জ-৩ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের মো. আবু জাহির জয়লাভ করেছেন।