হাবিবুর রহমান, ঢাকা: দেখার কথা কি, দেখছি আমি, শোনার কথা কি শুনছি ৩০ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুজছি৷ প্রতিদিন সকালে পত্রিকার পাতায় চোখ ভূলাতেই হায়দার হোসেনের এই বিখ্যাত গানটির কথা মনে পড়ে৷

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেক মুজিবুর রহমান এর হাত ধরে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময় আমরা অর্জন করি স্বাধীনতা৷ যে স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিল শোষিতদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ক্ষুদা, দারিদ্র মুক্ত, শিক্ষিত জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে স্থান করে সকল ধর্ম বর্ণ ও সকল শ্রেনী মানুষ এক সঙ্গে মিলে মিশে স্বাধীনভাবে বস বাস করা৷

কিন্তু আমরা প্রতিদিন সকালে পত্রিকা ও টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখলেই দেখতে পাচ্ছি পেট্রল বোমা হামলায় মানুষ নিহত ও আহতদের খবর, হরতাল কারীদের দেয়া আগুনে বাসে যাত্রী সহ চালক ও ড্রাইভারের দগ্ধ ও নিহতের ঘটনা, দুর্বৃত্তকারীদের দ্বারা রেল লাইন বিচ্যুত আর তাতে নিহতের ঘটনা৷

এসব যারা করছে তাদের সবাইকে হরতালকারী, পিকেটার ও দুর্বৃত্তকারী বলা হয়৷ কিন্তু তারা কি মানুষ না, হ্যাঁ তারা সবাই মানুষ রুপী কোন পশু, কিন্তু এটাও সত্য যে তারা কোন না কোন রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় এসব করছে৷ তাহলে দোষ কাদের যারা এসব করছে নাকি যে সব রাজনৈতিক দলের ইঙ্গিতে অপরাজনিতীর সংষ্কৃতী হিসেবে এসব করছে?

ফাহিম ছোট্ট শিশু সবে মাত্র দ্বিতীয় শ্রেনীতে উঠেছে৷ মা বাবা গরিব বলে ঠাই হয়েছে বস্তিতে৷ এই ইট কাঠের ঢাকা শহরে ধনীর ছেলে মেয়েদের মত খেলাধুলার জায়গা হলে ও এই শিশুর জায়গা হয় বস্তির সামনেই৷

সেখানে ও রক্ষা নেই তাদের কি দোষ ছিল ফাহিম ও ইয়াছিনের৷ ফাহিম ও ইয়াছিনের হাতে তুলে দেওয়া হয় লাল টকটকে বলের সদৃশ্য দুটি ককটেল তার তাতে ফাহিমের হাতের কবজি উড়ে যায় কি নৃশংস  এরা৷

আর তাদের বলা দুবৃত্ত৷ এসব যখন টিভির পর্দা ও পত্রিকার পাতায় দেখি তখন নিজেকে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক ভাবতে কষ্ট হয়৷ চিন্তা করি অদুও এদের বিচার হবে কি হবে না৷ ফাহিম বড় হবে কিন্তু সে আর স্বাভাবিক কাজ কর্ম ও চলা ফেরা করতে পারবে না৷

সে যখন পৃথিবীতে এসেছিল তখন তার হাত দুটি স্বাভাবিকেই ছিল৷ আর এখন এদেশের রাজনিতীবিদদের    প্রতিহিংসার কর্মসূচির কারনে আজ তার এ অবস্থা৷ এর দায় ভার কে নিবে ? কি ছিল তার অপরাধ ? এদেশের কোন রাজনীতিবিদ নিবে সে দায় ?

সরকারী দল সভা সমাবেশ করছে, মিছিল করছে এবং তাদের দাবী এদেশের জনগন তাদের সাথে আছে অপর দিকে বিরোদী দল হরতাল দিচ্ছে অবরোধ দিচ্ছে রাস্তা ঘাট নষ্ট করছে অবাধে গাছ কাটছে এবং তারাও দাবী করছে এদেশের মানুষ তাদের পক্ষে আছে তাদের আন্দোলন সমর্থন করছে৷ কিন্তু আসলে এদেশের জনগন কি চায় কাদের পক্ষে আছেন সে কথা রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিহিংসার বসবতী হয়ে চিন্তা করতে বেমালুম ভুলে গেছেন৷

ছেলে বাহিরে যাচ্ছে মা চিন্তায় থাকে কখন ফিরবে তার ছেলে, স্বামী বাহিরে যাচ্ছে স্ত্রী চিন্তায় থাকে কখন ফিরবে তার স্বামী, ভাই বাহিরে যাচ্ছে বোন চিন্তায় থাকে কখন ফিরবে তার ভাই, আদুও ফিরতে পারবে কি তার প্রিয় স্বজন নাকি চিরতরে হারিয়ে যাবে প্রতিহিংসিার রাজনৈতিক কোন কর্মসূচিতে ?