আ’লীগ সরকারআহসান আমীন, ঢাকা: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব নাকীয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ক্ষমতাসীন আ’লীগ ইতিমধ্যে নির্বাচন সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেছেন। তবে মন্ত্রীত্ব পাওয়া নিয়ে এখন চলছে সবার মধ্যে ঠান্ডা লড়াই। আ’লীগের শীর্ষ নেতারা মন্ত্রীত্ব পাওয়া নিয়ে তোড়জোর শুরু করে দিয়েছেন। অনেকেই গোপনে গোপনে প্রধানমন্ত্রীর সানিধ্য পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দলীয় সুত্রে জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদে এবার পুরাতন মন্ত্রীদের পাশাপাশি নতুন কিছু মুখ আসবে মন্ত্রীসভায়। তবে এ ক্ষেত্রে কার পৌষ মাস কার সর্বনাশ তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে না পারলে পুরাতন অনেক মন্ত্রীদের কপাল পুড়ছে বলে সুত্রটি আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছে।

দলীয় সুত্রগুলো জানায়, দলের যেসব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাদেরকে যেন বর্তমান মন্ত্রীসভায় অর্ন্তভুক্ত করা না হয়। দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে দলীয় নেতাকর্মীরা এমনটাই প্রত্যাশা করেন।

তারা বলেন যাদের কারণে দলের ভাবমর্যাদা কিছুটা হলেও বিতর্কিত হয়েছে তাদেরকে যেন এ মন্ত্রীপরিষদে স্থান না দেওয়া হয়। গত পাঁচ বছরে যেসব এমপি বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন তাদের এ অর্থের উৎস কোথায় বা কিভাবে এত অর্থের মালিক হলেন তার জট না খুলে সরকারের কোন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাদেরকে যেন নিয়োগও দেওয়া না হয়।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ল্যাপটপে থাকা মন্ত্রিপরিষদের তালিকায় স্থান পেতে এমপি-নেতাদের প্রতিযোগিতাও এখন শেষ পর্যায়ে। আগামীকাল শনিবার সন্ধার মধ্যেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের একটি তালিকা কেবিনেটে যাচ্ছে।

এখান থেকে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদের কাছে এ তালিকা চলে যাবে। ১২ জানুয়ারী রোববার নতুন সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শপথ পাঠ করাবেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ। এ শপথের মধ্যে দিয়েই বিলুপ্ত হয়ে যাবে নবম জাতীয় সংসদের মন্ত্রীসভা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আ’লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দশম জাতীয় সংসদে মন্ত্রীসভায় পুরাতন অনেক মন্ত্রীদের বাদ দিবেন বলে প্রধানমন্ত্রী এমন আভাস দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে নতুন কিছু হেভিয়েট প্রার্থীদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

তিনি আরো বলেন, যারা মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়ছেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নানা অনিয়ম অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তৃর্নমুল পর্যায়ের নেতারা তুলে ধরেছেন।

তাই বাদ পড়ছেন বলে তিনি আমাদের প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। তিনি এও বলেছেন, এই নতুন মন্ত্রিসভা স্মরনকালের সেরা মন্ত্রিসভা। যাতে কেউ এই মন্ত্রীসভাকে নিয়ে কোন দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তুলতে না পারে।

এখন দেখার বিষয় পুরাতন মন্ত্রীদের মধ্যে কতজন বহাল থাকে। আর পুরাতন কে বাদ দিয়ে কতজন নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় যোগ হয়। মন্ত্রিত্ব পেতে অনেকেই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বাদ পড়ার একটি সম্ভাব্য  তালিকাও জানা গেছে।

নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন না ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রভাবশালী নেতারা। বিভিন্ন সুত্র জানায় এবার মন্ত্রিসভায় যে সব প্রভাবশালী নেতারা স্থান পাচ্ছেন না তাদের মধ্যে রয়েছেন মহাজোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপুমনি, সাবেক মন্ত্রী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট সাহারা খাতুন,

প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজিউদ্দিন রাজু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, এডভোকেট শামসুল হক টুকু, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বর্তমানে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ভূমিন্ত্রী রেজাউল করিম হীরাসহ পুরনোদের মধ্যে আরো অনেকেই। তবে তারা সবাই নানামুখী তদবির করে যাচ্ছেন মন্ত্রীসভায় স্থান পেতে।