এরশাদকে আটকস্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: প্রধান বিরোধীদল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বুধবার সন্ধ্যায় দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দিবেন। গুলশানের একটি হোটেল থেকে বেগম খালেদা জিয়া এ বক্তব্যের মাধ্যমে তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনাও দিবেন।

৫ জানুয়ারীর নির্বাচনকে বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট বর্জন করা এবং প্রহসনের নির্বাচন বলে সেটাকে আখ্যায়িত করেছে। তার পর এই প্রথম খালেদা আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছে।

নির্বাচনের পুরো সময়টাই খালেদা জিয়া ঢাকায় তার বাসভবনে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ছিলেন।গত দুই দিনে খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্তত: ২৩ টি দেশের কূটনৈতিকদের সাথে বৈঠক করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে তিনি বৈঠক করেছেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। দফা দফায় কেন এই বৈঠক। এসব বৈঠকে কি নিয়ে কথা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিবিসির সাথে কথা বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী।

তিনি বলেন,৫ জানুয়ারী মাত্র ১৪৭টি আসনে যে তথাকথিক নির্বাচন হয়েছে তাতে  ১০ শতাংশ লোকও ভোট দিতে যান নি। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার আসলে রাষ্ট্র পরিচালনার মেন্ডেট পায় নি। আসলে গায়েরজোরে নিজেরাই সরকার নিজেরাই বিরোধী, আগের সংসদ এখনও বহাল আবার নতুন সংসদের সদস্যরা শপথ নিলেন, সংসদ সদস্য আসলে এখন কয়জন, এক এক আসনে একাধিক সংসদ সদস্য কিনা এসব বিষয়ে অনেক নৈতিক ও আইনী প্রশ্ন রয়েছে মানুষের মাঝে।

সেই বিষয়গুলো নিয়েই বেগম জিয়া সংবাদ সম্মেলনে কথা বলবেন। সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন থেকেই কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করার কথা। এ ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আমরা তো সংলাপে বসতে প্রস্তুত।

আমরা আগেও সংলাপে বসেছিলাম। বিএনপি আন্তরিকতার সাথে সেই সংলাপে অংশ নিয়েছে। গঠনমূলক প্রস্তাবও দিয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায় নি। যা দুঃখজনক। এই ক্ষেত্রে কূটনীতিকদের সাথে আপনাদের বৈঠকগুলো কতটুকু এগিয়ে নিতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, এটা এগিয়ে নিতে পরা না পারার কথা না।

আন্তর্জাতিক মহল থেকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বার বার বলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হওয়ার ব্যাপারে একটা উৎকণ্ঠা রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নি। তারা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। একথা সরকারকে তো উপলব্দি করতেই হবে। সরকারকে এ ব্যাপারে কান বা চোখ বন্ধ করে থাকলে চলবে না।

বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে সরকারকে যথা শিঘ্রই উদ্যোগ নিতে হবে, সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা সমঝোতায় পৌছানোর জন্য। নির্বাচনের পর বিএনপির সাথে কূটনীতিকদের আলাপ আলোচনা হলেও সরকারের সাথে এখন পর্যন্ত তেমন কোন আলোচনা না হওয়ার কারণ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,সেটা জানিনা।

তবে হয়তো শিখগিরই সরকারের সাথেও তাদের আলাপ আলোচনা হবে। তবে বার্তা তো সরকারের প্রতি পাঠানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। সেই বার্তাতো সরকার উপেক্ষা করতে পারবে না। এক ধরনের সমালোচনা আসছে যে বিএনপি আন্দোলনের পরিবর্তে কূটনীতিকদের দিয়ে সরকারের উপর একটা চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

এই সমালোচনাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?জবাবে শমসের মবিন বলন, চাপ সৃষ্টির কোন অবকাশ নেই। কূটনীতিকদের সাথে আমরা মতবিনিময় করছি। আমাদের বক্তব্য তুলে ধরছি। তাদের কথা শোনছি। তারা চাপ সৃষ্টি করা বা না করা সেটা তাদের সিদ্ধান্ত।

আমরা সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি যে কূটনীতিকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, সহিংসতা হয় এমন কোন কর্মসূচি দেয়া থেকে বিরত থাকতে এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, সহিংসতা কে করছে, কারা করছে সেটা সরকার তদšত্ম করছে না কেন? সরকারের কাছে আমাদের আহবান তারা যেন এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত করে। আমরা চাই সহিংসতার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হোক। তদন্ত করলেই কিন্তু বেরিয়ে আসবে এই সহিংসতার সাথে প্রকৃতপক্ষে কারা জড়িত।