EK_NEKস্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: নতুন সরকারের প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে সাত হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ৩ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। আর ৪ হাজার ১৭ কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা থেকে ব্যয় করা হবে।

রবিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদিত প্রকল্পসমূহের বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিডিপি ৬ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। এত দিন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হলেও এখন বিরোধী দলও বুঝতে পেরেছে রাজনীতি মানুষের জন্য। সেই মানুষকেই যদি মারা হয় তাহলে রাজনীতির আর কী থাকে। সরকারি দল ও বিরোধী দলের চলার পথ ভিন্ন হলেও আমাদের লক্ষ্য এক।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ একনেক-এর অন্যান্য সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে মার্চে অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাজধানী সাজাতে ১১৫ কোটি টাকার ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার এ্যান্ড বিউটিফিকেশন ওয়ার্কস অ্যারাউন্ড মিরপুর শেরেবাংলা ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম অ্যান্ড মেজর রোডস অব ঢাকা সিটি ফর আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপ টি-২০ বাংলাদেশ-২০১৪’ নামের প্রকল্পটির অধীনে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও দুটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম সংলগ্ন রাস্তার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সৌন্দর্যবর্ধন ও সাজসজ্জার কাজ এবং সুষ্ঠু যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল (টিএস) প্রকল্প, এটি বাস্ত্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৪ কোটি টাকা।

এর মধ্যে মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্প, মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। যার  সরকারি তহবিলের ৫১৭ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা ১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংস্কার (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৫ কোটি টাকা, সরকারি তহবিলের ৭৮ কোটি এবং বৈদেশিক ২৩৭ কোটি টাকা। মধুমতি নদীর ওপর কালনা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৫ কোটি টাকা। কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-মিঠামইন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি টাকা। পতœীতলা-সাপাহার-রহনপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যয় ১২৮ কোটি টাকা। কানসাট-রহনপুর-ভোলাহাট সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যয় ৩৩ কোট টাকা। শহীদ মনসুর আলী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যয় ৫৩ কোটি টাকা। বিরুলিয়া-আশুলিয়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, ব্যয় ৫০ কোটি টাকা। এস্টাবলিসমেস্ট অব ৩০ টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) ইন ডিফারেন্ট ডিস্ট্রিক (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ব্যয় ৮২৬ কোটি টাকা। সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা অঙ্গ, কৃষি উৎপাদন ও কর্মসংস্থান প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১০৮ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা ৩২৪ কোটি টাকা। হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্স প্রজেক্ট, ব্যয় ২ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ২৬৩ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা ১ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা।