babluদেশ প্রতিক্ষণ ডটকম, ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে লুটপাট ও শেয়ারবাজার ধসের দায় স্বীকার করায় তিনি অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান। বাবলু বলেন, ব্যাংকিং খাতে সাগর চুরির বিষয়টি স্বীকারের পর তার মন্ত্রী হিসেবে থাকার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনার দায় স্বীকার করে গভর্নর যদি পদত্যাগ পদত্যাগ করতে পারেন, তাহলে ব্যাংকিং খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও শেয়ারবাজার ধসের ঘটনায় দায় স্বীকার করা অর্থমন্ত্রী কেন পদত্যাগ করছেন না?

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে জাপার সাবেক এ মহাসচিব বলেন, ‘আপনি স্বীকার করেছেন, ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের মহোৎসব হয়েছে। তাহলে আপনার নৈতিক দায়িত্ব নেই? এত বড় দুর্নীতির পর আপনার এ পদে থাকার অধিকার নেই। আপনি পদত্যাগ করেন।’

তিনি বলেন, সম্প্রতিক সময়ে যে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে, তা দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। ৩ কোটি ৪০ লাখ ৯৭ হাজার টাকার বাজেট দিয়েছেন। এখানে ঘাটতি রয়েছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। আপনি গত অর্থবছর ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বড় বাজেট দিয়ে কাটছাঁট করেছেন। এবার বলছেন বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। আপনার হাতে কি আলাদীনের চেরাগ রয়েছে যে আপনি এ ঘাটতি মেটাবেন?

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আপনি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় শেয়ারবাজার লুট হয়েছে। অনেকে সর্বস্বান্ত হয়েছে। অনেক সাধারণ মানুষ আত্মহত্যা করেছে। শেয়ারবাজারে সূচক এখন ৪ হাজার কোটি টাকায় রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শেয়ারবাজারে টাকা দিয়ে অর্থনৈতিকে মজবুত করে। আর আমাদের ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল হতে হয়।

তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংকসহ সমস্ত ব্যাংকে চলছে লুটপাট আর লুটপাট। ব্যাংক এখন ক্যান্সারের ইনস্টিটিউশন। এজন্য রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক সরকারি খাত থেকে ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি সেক্টরে ছেড়ে দিলে আপনাকে (অর্থমন্ত্রী) আর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে না।

জাপার এই সংসদ সদস্য বলেন, বিবিএসের তথ্য মতে বর্তমানে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখের উপরে। যার ৭৪ শতাংশ যুবক, যাদের আমরা কাজে লাগাতে পারছি না। তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগাতে না পারায় তারা ইয়াবা, জঙ্গিবাদের দিকে যাচ্ছে। এর জন্য কে দায়ী? তাই বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।

এর আগে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেয় ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, সরকারি দলের আবদুল মান্নান, সাবের হোসেন চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, কামরুল আশরাফ খান, নাসিমা ফেরদৌসী, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম সুজন, মাহজাবিন খালেদ, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, রওশন আরা মান্নান প্রমুখ।