hassinnaদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সমান গুরুত্ব প্রদানের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রচনা, হস্তলেখা, খেলাধূলা, সঙ্গীত চর্চা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমাদের শিশুদের মেধা ও মনন বিকাশের সুযোগ হয়। ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যুক্ত থাকলে শিক্ষার্থীরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে থাকবে।

আজ রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত ৪৬তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকাশক্তি থেকে আমাদের ছেলে-মেয়েদের দূরে রাখতে হবে। আজকের ছেলে-মেয়েরা যেন সচ্চরিত্রের আদর্শবান হয়ে আগামী দিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পড়াশোনার সময় পড়াশোনা করতে হবে। একইসঙ্গে খেলাধূলা, সংস্কৃতি চর্চা ও থাকতে হবে। সেদিকে মনযোগ দিয়েই সবাইকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, তখনই আমরা খেলাধূলার প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেই। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার সরকারে এসে দেশীয় খেলাগুলোকে আমরা গুরুত্ব দিই। তৃণমূল পর্যায়ে জেলা-উপজেলা থেকেই ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, কাবাডি, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল, হ্যান্ডবল,ব্যাডমিন্টন, দাবা, সাঁতারসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ নেই। তাই আজকে তুণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা প্রতিযোগীরা ভবিষ্যতে আরও উন্নত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস।

সরকার প্রধান বলেন, এ প্রতিযোগিতায় দেশের ১৬ হাজার ১০১টি বিদ্যালয়, ৭ হাজার ৬১১টি মাদ্রাসা থেকে ৭টি ইভেন্টে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮০৮ জন জাতীয় পর্যায়ে এসেছে। এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে অনেক মেধাবী ক্রীড়াবিদ উঠে আসবে। পর্যায়ক্রমে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে পারবে তারা।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন; মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আলমগীর; মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড.এস.এম. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।

প্রসঙ্গত, সারাদেশের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যায়ের স্কুল, মাদ্রাসা ও করিগরি সম্পর্কিত ১৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮০৮ জন ক্রীড়াবিদ নিয়ে ১৬ জানুয়ারি মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা কলেজে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। শিক্ষা বোর্ডগুলোকে- বকুল, গোলাপ, পদ্ম ও চম্পা- ৪ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতা।

৪৪৪ জন ছেলে এবং ৩৪৪ জন নারী ক্রীড়াবিদ নিয়ে এবারের প্রতিযোগিতায় অ্যাথলেটিক্স, হকি, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, ক্রিকেট এবং টেবিল টেনিসসহ মোট ৭টি আইটেমে ৪২টি ইভেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

হকিতে ছেলেদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে (পদ্ম অঞ্চল) আরমানীটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। রানার্স আপ হয়েছে শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ স্কুল ও কলেজ। মেয়েদের হকিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে (পদ্ম অঞ্চল) আতরজান উচ্চ বিদ্যালয় এবং রানার্স আপ হয়েছে সালন্দর উচ্চ বিদ্যালয়।

ক্রিকেটে (পদ্ম অঞ্চল) ছেলেদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়; রানার্স আপ রংপুর জেলা স্কুল। মেয়েদের ক্রিকেটে (পদ্ম অঞ্চল) চ্যাম্পিয়ন আজিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এবং রানার্স আপ দেবীগঞ্জ রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়। অ্যাথলেটিক্সে গোলাপ অঞ্চল জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এবং পদ্ম অঞ্চল জাতীয় রানার্স আপ হয়।