এখনও শুরু হয়নি ৩০৪ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ওই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয় তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু। ২০১০ সালে ওই উদ্বোধনের পর সেতু থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ৬ লেন সংযোগ সড়ক এবং সেতুর দক্ষিণ পাশে মইজ্যারটেক-ভেল্লাপাড়া ক্রসিং পর্যন্ত ৪ লেন সড়ক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ৭ বছর পার হলেও ৩০৪ কোটি টাকার প্রকল্পটির মাঠ পর্যায়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু জন্য ৪৮৩ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছিল কুয়েত সরকার। কিন্তু সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩৪৭ কোটি টাকা; উদ্বৃত্ত ১৩৬ কোটি টাকার মধ্যে ৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, অর্থমন্ত্রালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় এ প্রকল্পের বাকি কাজ করা সম্ভব হয়নি।
সওজ জানিয়েছে, বিভাজকসহ তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কটি ২৭ মিটার চওড়া করা হবে। এর দুই পাশের ৪ লেন দিয়ে দ্রুতগামী এবং ২ লেনে ধীরগতির গাড়ি চলাচল করবে। অন্যদিকে সেতু থেকে মইজ্যারটেক-ভেল্লাপাড়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক চারলেন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ও কুয়েত সরকারের যৌথ অর্থায়নে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০৪ কোটি টাকা।
প্রকল্পের মোট বাজেটের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১৬৮ কোটি ও কুয়েত ফান্ড থেকে ১৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা। ইতোমধ্যে ৯৪ কোটি টাকা দিয়ে সড়কের ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে এখনও কাজ শুরু হয়নি।
কর্ণফুলী সেতুর টোল আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন জানান, এ সেতু দিয়ে বাকলিয়া, দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার যাত্রীরা চলাফেরা করেন। কর্ণফুলী সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৬ হাজার গাড়ি চলাচল করে। এর ৮০ শতাংশই সংযোগ সড়ক হয়ে সেতুতে ওঠে। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় সংযোগ সড়কের প্রশস্থ কম হওয়ায় প্রতিদিন সড়কের দুই পাড়ে যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু সংযোগ সড়কের কাজ না হওয়ায় সেতুর সুফল পাচ্ছে না জনগণ।
বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী সেতু সংযোগ সড়ক ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, দ্রুত গতির গাড়িতে এ ৫ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে কমপক্ষে ৪০ মিনিট সময় লাগে। এ সংযোগ সড়কের ৬ লেন প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ভোগান্তি আরও বাড়ছে। আরও সড়কে বিদ্যমান গর্তগুলো দুর্ভোগ আরও বাড়াচ্ছে।
সওজ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তোফায়েল মিয়া অর্থসূচককে জানান, বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের ৬ লেন প্রকল্প সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে।
তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু উদ্বোধনের পর এ দুইটি সংযোগ সড়কের কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৫ সালের জুনে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়। সড়কের নকশা ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজও শেষ হয়েছে।