1427293688দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : সরকার দেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে ২০১৯ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎস থেকে ৬৯৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে এ উৎস থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ কেনারও পরিকল্পনা রয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আজ বাসসের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।

নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকার সারাদেশে ৫০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই প্রায় দুই কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে।

বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুয়ায়ী, দেশে ইতোমধ্যেই প্রায় ৫০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম, সোলার ইরিগেশন ৪৪১, সোলার ড্রিংকিং ওয়াটার সিস্টেম ১২২, বায়োগ্যাস প্লান্ট ৪৫,০৭০, উন্নত কুক স্টোভ ৩০,২২,২১৩, উন্নত রাইস পারবোলিং সিস্টেম ৭৫টি স্থাপন করা হয়েছে।

পাশাপাশি সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে ১৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সোলার প্যানেল স্থাপনের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সরকার টেকসই জ্বালানী উন্নয়নের জন্য টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ ৪২৩ মেগাওয়াট এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ মোট বিদ্যুতের ৩.৪৫ শতাংশ। ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মদ্যে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে জ্বালানী দক্ষতা মাস্টার প্লান করার লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছে। এ সকল লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালের মধ্যে দেশ মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশ আশাবাদী। এ সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ৭৮ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে এবং ২০২১ সালের মধ্যে সকল নাগরিককে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বিষয় বিবেচনায় রেখে সরকারও জলবায়ু বান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে এবং যে কোন প্রাকৃতিক দুযোর্গ থেকে পরিবেশ রক্ষায় একটি জাতীয় নীতি প্রণয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার কক্সবাজারের টেকনাফে ২০০ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদনে একটি সোলার পার্ক স্থাপনে একটি চুক্তি করেছে। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে এ পর্কে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সকল নাগরিককে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের পল্লী এলাকার জনগণের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ইডকল ২০০৩ সালের জানুয়ারি এসএইসএস কর্মসূচী শুরু করে। ইডকল ১৮টি মিনি গ্রিড প্রকল্প অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে সাতটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকিগুলো নিমার্ণাধীন রয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে আরো ৫০টি মিনি গ্রিড স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪৫৯ টি সোলার সেচ পাম্প অনুমোদন করা হয। এর মধ্যে ইতোমধ্যেই ৩২৪টির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকিগুলোর কার্যক্রম খুব শিগগির শুরু হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বিশ্বে এটি হবে সবচেয়ে বড় এবং দ্রুততম প্রকল্পের একটি।