1458741879এইচ কে জনি : দেশে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায়ে নজরদারি বাড়াবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হচ্ছে কি-না তাও খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ নজরদারি না থাকলে ‘প্রলুব্ধ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী’দের গুরুতর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন ২০১৭) মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির এসব কথা বলেন ।

তবে তেমন কোনো পরিস্থিতি যেনো বাজারে না ঘটে সেজন্য পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতো বাংলাদেশ ব্যাংকও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে পুঁজিবাজারে ২০১০ সালের মন্দা থেকে বেরিয়ে আসার প্রবণতাকে সূদৃঢ় ও স্থায়ী করার জন্য বিএসইসিকে বাজারের সতর্ক নজরদারি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

ফজলে কবির বলেন, বাজারে যথাযথ নজরদারি না থাকলে অতীতের মতো এবার প্রলুদ্ধ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তবে এ নিয়ে বিএসইসি সতর্কতামূলক উপদেশ জারি করেছে। বিনিয়োগকারীদের আর্থিক জ্ঞান উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছে।

গভর্নর পুঁজিবাজারে উদ্যোক্তাদের শেয়ার ও অস্বাভাবিক উচ্চ পিই রেশিওধারী শেয়ারগুলোর বিপরীতে মার্জিন ঋণ যোগানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা বাঞ্ছনীয় উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এ নিয়ে সতর্ক রয়েছে। এর অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোজার আইনে নির্দেশিত মাত্রায় সীমাবদ্ধ রাখার ব্যাপারে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দিক থেকেও তাদের গ্রাহকদের নেয়া বিভিন্ন ঋণ সঠিক খাতে ব্যবহার হচ্ছে কি-না তা নজরদারিতে আছে।

গভর্নর বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য স্ট্যার্টাপ, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি পুঁজিবাজারের বিকাশের জন্য নতুন প্রয়াস হিসেবে কাজ করছে। বিএসইসি এই প্রয়াসকে সমর্থন যোগাচ্ছে। সংস্থাটির ইস্যু করা অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট নীতিমালার আলোকে নতুন উৎপাদন উদ্যোগগুলোকে আর্থিকখাতের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে কার্যক্রম সুগম করা জন্য বিআইডিএ’র সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

নতুন মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরে পুঁজিবাজার বাড়ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রধান সূচক বেড়েছে ২৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। বর্তমানে দেশের জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান ১৫ শতাংশ। এটা দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকে সতর্ক পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ আইন নির্দেশিত মাত্রায় সীমাবদ্ধ রাখার ব্যাপারে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দিক থেকেও তাদের গ্রাহকদের নেওয়া বিভিন্ন ঋণ সঠিক খাতে যথাযথ ব্যবহার হয় কি না- সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হবে।

অস্বাভাবিক লাভের আশায় বিনিয়োগ যাতে অপব্যবহার না হয়- সে বিষয়ে নজরদারিও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।