images (1)দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সংসদে জানিয়েছেন, প্রতিবছর সারাবিশ্বে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে প্রায় ৬০ লাখ লোকের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ৫০ লাখ সরাসরি তামাক ব্যবহারের কারণে এবং প্রায় ৬ লাখ পরোক্ষ ধূমপানের কারণে মৃত্যুবরণ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের একশ’ কোটি ধূমপায়ীর মধ্যে ৮০ লাখ নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।

জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বৃহস্পতিবার নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ( ভোলা-৩) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল সাড়ে ৪টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে ২০০৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক চুক্তিতে (WHO-Framework Convention on Tobacco Control বা FCTC) স্বাক্ষর করে ও ২০০৪ সালে অনুস্বাক্ষর করে। এই চুক্তির বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী সরকার ২০০৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ প্রণয়ন করে। ২০০৫ সালে প্রণীত আইনকে FCTC-এর সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ করার উদ্দেশে ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয় এবং ২০১৫ সালে এর বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিবীক্ষণ, গবেষণা এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ‘‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’’ নামে একটি সেল রয়েছে। সেলটি ‘‘International against tubaeculosis Lung Disease (The Union)’’ নামে একটি বৈদেশিক সংস্থার অর্থায়নে ‘‘Establishment of effective tobacco control in bangladesh’’ প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। নি বলেন, আইনটি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তামাকের কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল সারা বছরই সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের সহযোগিতায় বিভিন্ন পর্যায়ে নানা সভা-সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে। মোবাইল কোর্টে সাধারণত পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান, তামাক কোম্পানিগুলোর বেআইনি প্রচারণা, প্রণোদনা ও বিজ্ঞাপন; ১৮ বছরের নিচে কারও কাছে বা কারো দ্বারা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় প্রভৃতি আইন লঙ্ঘনে জরিমানা করা হয়। ক্ষেত্রে বিশেষে কারাদণ্ডেরও বিধান রয়েছে।

৮ বছরে ১৪ হাজার ৫৭৭ জন চিকিৎসক নিয়োগ
পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধানের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারের স্বল্পতা কমানোর জন্য বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫৭৭জন চিকিৎসক নিয়োগ প্রদান করেছে। অবসরজনিত ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের কারণে ডাক্তারদের বেশ কিছু পদ মাঝে মধ্যেই শুন্য থাকে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ শুন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে বিসিএস-এর মাধ্যমে আরও ডাক্তার নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

মো. রুস্তম আলী ফরাজীর (পিরোজপুর-৩) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে মোট নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৮টি। তন্মধ্যে নার্সিং ইনস্টিটিউট ৪৩টি, নার্সিং কলেজ (বেসিক) ৮টি, নার্সিং কলেজ (পোস্ট বেসিক) ৩টি এবং নবনির্মিত নার্সিং কলেজ ৪টি।

তিনি বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে নার্সদের পদ শুন্য রয়েছে। মঞ্জুরীকৃত মোট পদের সংখ্যা ২৮ হাজার ৬৬৩টি। বর্তমানে কর্মরত আছে ২৫ হাজার ৭৮৩ জন নার্স। অবশিষ্ট শুন্য পদগুলো দ্রুত পূরণ করা হবে।