সম্ভাবনার দিনে বিষাদের বিকেল
দেশ প্রতিক্ষণ, ডেস্ক : চাওয়া আর পাওয়ার মাঝে কখনো কখনো বিস্তর তফাৎ থেকে যায়। কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় দিন সেই তফাৎটা বিষের বাঁশি হয়ে বেজে থাকলো বাংলাদেশের জন্য। ‘২ উইকেটে দিন শেষ করা সময়ের ব্যাপার’ এই স্বস্তির ভেতর দেখতে দেখতে ৫ উইকেট নেই! দিন শেষে সংগ্রহ ২১৪। বাংলাদেশ ১২৪ রানে পিছিয়ে।
আক্ষেপের শুরু ইমরুলকে দিয়ে। দিনের সম্ভাব্য খেলা তখন ৩ ওভারের মতো বাকি। সান্দাকানের নিচু হয়ে আসা এক শর্ট বলে ব্যাকফুটে খেলতে যান ইমরুল। বল ব্যাটে আসতে অনেকটা সময় নেয়। তবু তিনি লাইন ধরতে ব্যর্থ হন। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল পায়ে লাগে। আবেদন ওঠে। আম্পায়ার তর্জনী উঁচু করেন চোখের পলকে।
ঠিক পরের বলে তাইজুলের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদন তোলে শ্রীলঙ্কা। আম্পায়ার এবার সাড়া না দিলেও রিভিউতে কপাল পোড়ে তাইজুলের। পরের ওভারের চতুর্থ বলে সাব্বির রহমানের বিদায় (৪২)!
অথচ শুরুটা ছিল অন্যরকম। দিলরুয়ান পেরেরা বাঁহাতিদের বল করতে ভালোবাসেন। শ্রীলঙ্কার ঘরোয়া লিগে বাঁহাতিদের বিপক্ষে তার সুনাম আছে। হেরাথ সেটা জানতেন। তাই ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাকে আক্রমণে আনেন। পেরেরা শুরুতে একটু প্রভাব বিস্তার করলেও দুই বাঁহাতি সৌম্য-তামিম তা সামলে নেন। দুজনে ৯৫ রানের জুটি গড়েন।
এই রানে বাংলাদেশের স্বপ্নটা আরো বড় হতে পারতো। যদি না বিকেলটা অমন হতো।
বৃহস্পতিবার সকাল সকাল লঙ্কানদের আটকানোর পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশের অপেক্ষা বাড়ান। শেষ তিন জুটিতে রান এসেছে ১৪৩! মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে দিনেশ চান্দিমাল একাই খেলেছেন ৩০০ বল। দলের স্কোরে রান যোগ করেছেন ১৩৮টি।
স্বাগতিকদের অলআউট করতে মিরাজের অবদান ৩ উইকেট। দুটি করে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শুভাশিস রায় এবং সাকিব আল হাসান। আরেকটি তাইজুল ইসলামের।
জবাব দিতে নেমে তামিম প্রথম কয়েক ওভার একটু রয়েসয়ে খেলেন। ২০ পার করার পর বারবার ডাউন দ্য উইকেটে আসছিলেন। কারণও ছিল। ওই সময় হেরাথ ফিল্ডারদের খুব কাছে রেখে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন। অন্যদিকে তামিমের চেষ্টা ছিল কাউন্টার দেয়া। সেই পথে হাঁটতে হাঁটতে দুইবার বেঁচে যান। হেরাথ রিভিউ নিতে যেয়েও নেননি। নিলে নির্ঘাত বিপদ ছিল।
অবশেষে তৃতীয়বার তামিমকে ‘ফাঁসতে’ হয়। ব্যক্তিগত ৪৯ রানে হেরাথের বলে রিভিউতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন।
এরপর ইমরুলকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেন সৌম্য। দুজনে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। চায়নাম্যান সান্দাকানের চোখ জুড়ানো এক ডেলিভারি মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হন। বল শরীরের ভেতর ছিল। সৌম্য উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ব্যাট-প্যাড ফাঁকি দিয়ে ‘চতুর’ বল স্টাম্প খেয়ে নেয়। টানা তিন ইনিংসে অর্ধশতকের (৬১) পরপরই ফিরতে হয় সৌম্যকে। গল টেস্টে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৭১। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩তে পা রাখতেই আউট হন।
৫ উইকেট চলে যাওয়ার পর মুশফিক-সাকিব আশা জিইয়ে রেখেছেন। হঠাৎ ধেয়ে আসা ঝড় সামলাতে সাকিব টি-টুয়েন্টির আশ্রয় নেন। ৮ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত আছেন। অধিনায়কের সংগ্রহ ২।