19-1-1দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : ব্যাংকিং খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা.রাজী হাসান। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মিলানায়তনে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। এতে বক্তব্য রাখেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. শামসুদ্দিন আহমেদ,বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম প্রসাদ দাস।

মূল গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন ছিদ্দিকী।

আবু হেনা মোহা.রাজী হাসান বলেন, ব্যাংকিং খাতের বেশ কিছু জায়গায় সুশাসন না থাকায় অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন খুবই প্রয়োজন। ব্যাংকিং খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগ (আইসিসিডি) যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন থাকবে না। আইসিসিডি ব্যাংকিং খাতের তৃতীয় নয়ন হিসেবে কাজ করে। তাই এ ডিভিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, সুশাসনের অভাবে ব্যাংকের শাখা থেকে ডিপোজিটরদের ২ হাজার কোটি টাকা প্রধান শাখায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার অনেক সময় দেখা যায় ব্যাংকের বোর্ডের বাইরের লোকজন এসে বোর্ড মিটিং করছে। এগুলো ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো খবর নয়। এভাবে চলতে থাকলে ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সুপারভিশনের জন্য লোকবল কম উল্লেখ করে ডেপুটি গভর্নর বলেন, সুপারভিশনের জন্য লোকবল মাত্র ৭৫০ থেকে ৮০০ জন। কিন্তু সারাদেশে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা রয়েছে সাড়ে ১২ হাজার। তাই লোকবলের অভাবে সব ধরনের সুপারভিশনে কিছু কিছু দুর্বলতা রয়েছে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক বলেন, গত ছয় বছরের বেশি সময় ধরে বিআইবিএম অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিপালনের ওপর কর্মশালা করে আসছে। ব্যাংকিং খাতের গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিতে ব্যাংকারদের আগ্রহ বাড়ছে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের আইসিসিডি এখনও ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। এমন অবস্থার পরিবর্তন না হলে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না।

তিনি বলেন, ব্যাংকারদের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এটি করতে না পারলে ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম রোধ করা কঠিন।

বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, যেসব ব্যাংকে অডিট বিভাগে জনবল কম আছে সেখানে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। শতভাগ সুশাসন বজায় রাখতে অডিট বিভাগকে শক্তিশালী এবং স্বাধীনতা দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ব্যাংকের গ্রাহকদের দিক বিবেচনা করে এ কেন্দ্রীয় ব্যাংক যাবতীয় পদক্ষেপ নেই। সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিপালনও ঠিক এ দিক বিবেচনা করে করা হয়েছে। নিরীক্ষা বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে এ নীতিমালায়।