Photoকমিশন বাণিজ্যের কারণে নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স (সাধারণ বীমা) কোম্পানিগুলো ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পাচ্ছে না। যে কারণে কোম্পানিগুলোর গ্রোথও সন্তোষজনক নয়। তারপরেও ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি যথেষ্ট ভালো ব্যবসা করছে। যথেষ্ট পরিমাণ রিজার্ভ ও বিনিয়োগ আয় সন্তোষজনক থাকায় ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড প্রতি বছর শেয়ারহোল্ডারদের হ্যান্ডসাম ডিভিডেন্ড দিয়ে যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন কোম্পানিটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিব মো. হাবিব জামাল (এফসিএ)।আজ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিজ কার্যালয়ে দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় কোম্পানির বর্তমান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেন। তারই চুম্বক অংশ সম্মানিত পাঠক ও উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান।

দেশ প্রতিক্ষণ : দেশে মোট কতটি নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স কেমন ব্যবসা করছে?

মো. হাবিব জামাল : দেশে মোট ৪৫টি নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স রয়েছে। যেহেতু ননলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক গ্রোথ কম। সেহেতু সবাই আয় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ফলশ্রুতিতে কমিশন নিয়ে কোম্পানিগুলো তীব্র প্রতিযোগীতায় নেমেছে। ফলে কমিশনের হারও দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে কোম্পানিগুলোর প্রফিটেবিলিটি কমে যাচ্ছে। ক্লেইম দেওয়ার সামর্থ কমে যাচ্ছে। তবে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স এরমধ্যেও ভালো ব্যবসা করছে। আমাদের ব্যবসা নিয়ে শেয়ারহোল্ডার বা গ্রাহকদের কোনো অভিযোগ নেই।

দেশ প্রতিক্ষণ : তীব্র প্রতিযোগীতার মাঝে প্রতিবারের ন্যায় সামনের বছরগুলোতেও কি ইস্টার্ণ ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স শেয়ারহোল্ডারদের হ্যান্ডসাম ডিভিডেন্ড দিতে পারবে?

মো. হাবিব জামাল : কোম্পানির রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে। এছাড়াও বিনিযোগও আয়েও সন্তোষজনক। তাই আগামীবছরগুলোতে আশা করি ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স শেয়ারহোল্ডারদের পূর্বের ন্যায় ডিভিডেন্ড দিতে পারবে।

দেশ প্রতিক্ষণ : চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের যে পরিমাণ ইপিএস এসেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকেও কি সেরকমেই থাকবে।

মো. হাবিব জামাল : প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস এসেছে ০.৭২ টাকা। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস কেমন আসবে তা এই মুহুর্তে বলা মুশকিল। তারপরেও আশা করি প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস কম আসবে না। একই রকম থাকবে নতুবা বাড়বে।

দেশ প্রতিক্ষণ : কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট সর্ম্পকে কিছু বলুন?

মো. হাবিব জামাল : কোম্পানির ম্যানেজমেন্টে যারা রয়েছে তারা প্রত্যেকেই অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, পরিশ্রমিক ও সৎ। একটা কোম্পানিকে কিভাবে পরিচালনা করতে হয় তা তারা খুব ভালো করেই জানেন। কাজের ক্ষেত্রে তারা কোনো কম্প্রোমাইজ করে না। যে কারণে এতো প্রতিযোগীতার মধ্যে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স সফলতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করছে। আর সত্যি কথা বলতে কি, এরকম একটি ম্যানেজমেন্টের আন্ডারে চাকরি করা ভাগ্যের ব্যাপার। আমি অনেক ভাগ্যবান যে একটি ভালো মানের ম্যানেজমেন্টের আন্ডারে চাকরি করছি।

দেশ প্রতিক্ষণ : দেশে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের কতটি শাখা রয়েছে? তারা কেমন ব্যবসা করছে?

মো. হাবিব জামাল : চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রংপুর ও কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ২৫টি শাখা অফিস রয়েছে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের। প্রত্যেকটা শাখা অফিস যথেষ্ট ভালো ব্যবসা করছে। আন্তরিকতার সাথে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

দেশ প্রতিক্ষণ : বর্তমানে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহক সংখ্যা কত রয়েছে? গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে?

মো. হাবিব জামাল : বর্তমানে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের সাধারণ ও ভেল্যুয়েবলসহ মোট ৮ হাজারের অধিক গ্রাহক রয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রাহক সংখ্যা আরও বাড়ানোর ব্যাপারে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- গ্রাহকদের দাবী নিষ্পত্তির ছবি ও কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সংক্রান্ত সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশ করা, বীমা মেলায় অংশগ্রহণ করা, ভ্যালুয়েবল ক্লাইন্ড ও নতুন ক্লাইন্ডকে কোম্পানির তরফ থেকে বিভিন্ন গিফট আইটেম প্রদান।

দেশ প্রতিক্ষণ : আগামী ৫বছরের মধ্যে ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান?

মো. হাবিব জামাল : আগামী ৫ বছরের মধ্যে কোম্পানির প্রিমিয়াম আয় ২শ’ কোটি টাকায় উন্নিত করাসহ শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ডের হার নুন্যতম ২৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। এছাড়াও কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং ট্রিপল এতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আমাদের আগামী ৫ বছরের ভিশন।

দেশ প্রতিক্ষণ : ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স নিয়ে আপনার অভিমত ব্যক্ত করার জন্য ধন্যবাদ।

মো. হাবিব জামাল : আপনাকেও ধন্যবাদ।