DSE-sucokদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: চলতি বছরের এপ্রিল শেষে ৮৪টি ব্রোকারেজ হাউজের মোট ঋণাত্মক ইক্যুইটির পরিমাণ ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। এ ঋণাত্মক ইক্যুইটির ৮৩ শতাংশ শীর্ষ ১৬ প্রতিষ্ঠানের কাছে।

অর্থ্যাৎ ১৩ হাজার ৬৯৪ টি বিও হিসাবে ৩ হাজার ৭০২ কোটি টাকাই ১৬ প্রতিষ্ঠানের কাছে। যা ব্রোকারেজগুলোর সম্মিলিত ঋণাত্মক ইক্যুইটিধারী বিও হিসাবের ৬২.৮৪ শতাংশ। আর বাকী ৬৮ টি ব্রোকারেজের কাছে রয়েছে ৭৯৩ কোটি টাকা বা ১৬.৬৫ শতাংশ ঋণাত্মক ইক্যুইটি।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে, দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর কাছে ঋণাত্মক ইক্যুইটির হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে। এবং তা প্রতিমাসে দাখিল করার নির্দেশ দেয়। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর কাছে সিকিউরিটিজগুলোর পাঠানো তথ্যে দেখা যায়, মার্জিন ঋণ প্রদানকারী মোট ব্রোকারেজের সংখ্যা ১০১ টি। আর মার্জিন ঋণধারী মোট বিও হিসাবের সংখ্যা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮২৪ টি। এর মধ্যে ২১ হাজার ৭৯২ টি হিসাবে ৪ হাজার ৪৭১ কোটি টাকার ঋণাত্মক ইক্যুইটি রয়েছে।

শীর্ষ ঋণাত্মক ইকুইটিধারী ব্রোকারেজের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ১ হাজার ৪৯৬ টি মার্জিন ঋণধারী বিও হিসাবের মধ্যে মোট ১ হাজার ১৩৭ টি হিসাবেই ঋণাত্মক ইক্যুইটির পরিমাণ ৭০৪ কোটি টাকা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রিলায়েন্স ব্রোকারেজের ২ হাজার ৭৯৭টি মার্জিন ঋণধারী বিও হিসাবের মধ্যে ৮৫৩ টি হিসাবে ঋণাত্মক ইক্যুইটির পরিমাণ ৩৬৪ কোটি টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডের ৫ হাজার ১৯৭ টি মার্জিন ঋণধারী বিও হিসাবের মধ্যে ৭০৬ টি হিসাবে গ্রাহকের ঋণাত্মক ইক্যুইটির পরিমাণ ৩৩০ কোটি টাকা।

এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজের ৭৬১টি হিসাবে ২৪৮ কোটি টাকা, রাষ্ট্রায়ত্ব আইসিবি সিকিউরিটিজের ৫২৫টি হিসাবে ২৩৬ কোটি টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজের ২ হাজার ৫৯টি হিসাবে ২১২ কোটি টাকা, এনবিএল সিকিউরিটিজের ১ হাজার ২০৬টি হিসাবে ২০৯ টাকা, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের ৬৭১ টি হিসাবে ২০৫ কোটি টাকা,

আইএফআইসি সিকিউরিটিজের ৫৬২টি হিসাবে ১৮৪ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজের ৪৭৮ টি হিসাবে ১৭৩ কোটি টাকা, এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসের ১ হাজার ৬৩৪ টি হিসাবে ১৬৭ কোটি টাকা, এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের ৬৬৯ টি হিসাবে ১৫৫ কোটি টাকা,

প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের ২২৯ টি হিসাবে ১৪২ কোটি টাকা, এমটিবি সিকিউরিটিজের ৭৮২ টি হিসাবে ১২৮ কোটি টাকা, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজের ১ হাজার ৬৯ টি হিসাবে ১২৪ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজের ৩৫৩ টি হিসাবে ১১৫ কোটি ৩৬৪ টাকা ঋণাত্মক ইক্যুইটি রয়েছে।

এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর মধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটির দিকে শীর্ষে রয়েছে, রিলায়েন্স ব্রোকারেজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ ৩৬৪ কোটি টাকা। এছাড়া ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডের ৩৩৫ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজের ২৬৬ কোটি ৬৪ লাখ ৫৪ হাজার ১০ টাকা, আইসিবি সিকিউরিটিজের ২৩৬ কোটি টাকা, এনবিএল সিকিউরিটিজের ২০৯ কোটি টাকা,

মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজের ২০৩ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজের ১৭৩ কোটি টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজের ১৬৭ কোটি টাকা, এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের ১৫৫ কোটি টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের ১৪২ কোটি টাকা এবং ঢাকা সিকিউরিটিজের ১৩২ কোটি টাকা নেগেটিভ ইক্যুইটি রয়েছে। আর সম্মিলিতভাবে সিএসইর ২১ হাজার ২২৪ টি বিও হিসাবে মোট নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ ২ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।

সিকিউরিটিজ হাউজগুলো এমন তথ্য পাঠিয়েছে সিএসইর কাছে। এ বিষয়ে ব্রোকার্স এসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বিএমবিএর নেতারা বাজারে টানা মন্দাভাবের পেছনে ঋণাত্মক ইক্যুইটিকে দায়ী করেন। তারা মনে করেন, পুঁজিবাজারের স্বার্থেই এ সমস্যাকে সমূলে উৎপাটন করা খুবই প্রয়োজন।

এজন্য প্রয়োজন সরকারের নীতিগত সহায়তা। এর জন্য তারা বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে সহজ শর্তে বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে তহবিল চেয়েছেন। যেন প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা মূলধন সরবরাহ করে কিংবা বন্ড ইস্যু করে কিংবা অন্য কোন উৎস থেকে অর্থায়নের মাধ্যমে ঋণাত্মক ইকুইটি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

এদিকে ঋণাত্মক ইক্যুইটি সমন্বয়ের জন্য স্টেকহোল্ডারদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কমিশন বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিচ্ছে। যেমন ঋণাত্মক ইক্যুইটি হিসাবে লেনদেন, সুদ মওকুফ, মার্জিণ রুলস, ১৯৯৯ এর রুল ৩(৫)) উপর স্থগিতাদেশ, সঞ্চিতি সংরক্ষণে শিথিলতা প্রভৃতি।