peoples

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান : পিপলস্ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ১৯৯০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বীমা খাতের এ কোম্পানির মুনাফা বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি ২০১১ সাল থেকে বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিকভাবে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। সর্বশেষ প্রকাশিত চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশেরও বেশি মুনাফা বেড়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির। আগামিতেও মুনাফা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরে পিপলস্ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সম্পদ ও শেয়ারহোল্ডার ইক্যুয়িটি বিগত বছরগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্ভাব্য দায়-দেনা পরিশোধের জন্য কোম্পানীর সম্পদ ও সঞ্চিতি বিগত বছরের তুলনায় শক্তিশালী অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। কোম্পানীর মোট সম্পদ ও রিজার্ভ বিগত বছরের তুলনায় শক্তিশালী হয়েছে। এর কারণে শেয়ারপ্রতি নীট সম্পদ মূল্য বা এনএভি দাঁড়িয়েছে ২৪.৩১ টাকা। এর আগের বছর শেয়ারপ্রতি এনএভি ছিল ২২.৮৫ টাকা।

এদিকে সর্বশেষ সমাপ্ত বছরে মোট প্রিমিয়াম বাবদ ৬০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা আয় হয়েছে, যা ২০১৫ সনে ছিল ৫৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ একবছরের ব্যবধানে গ্রস প্রিমিয়াম আয় ১৩.৬৫ শতাংশ বা ৭ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনিয়োগ ও অন্যান্য আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা বিগত বছর ছিল ১২ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এ ছাড়াও পুনঃবীমা প্রদান ও গ্রহণ সমন্বয়ের পর ২০১৬ সালে নীট প্রিমিয়াম হয় ৩৮ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর আগের বছর যা ছিল ৩৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, পিপলস্ ইন্স্যুরেন্স ২০১১ সাল থেকেই ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। আলোচ্য সময়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিয়েছে এ কোম্পানি। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস করেছে ০.৫৮ টাকা। এর আগের বছর এ কোম্পানির ইপিএস ছিল ০.৩৭ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ৫৬.৭৬ শতাংশ বা ০.২১ টাকা বেড়েছে।

পিপলস্ ইন্স্যুরেন্সের ব্যসসায়ের হালচাল সম্পর্কে কোম্পানি সচিব চৌধুরী হামিদ গাফ্ফার দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে আমাদের মুনাফা অনেক ভালো হয়েছে। আশাকরি, আগামিতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বিনিয়োগকারীরা ভালো ডিভিডেন্ড পাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কমিশন বাণিজ্যের কারণে ব্যবসা করতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। এ কমিশন বাণিজ্য যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করা উচিত।

উল্লেখ্য, বর্তমানে এ কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে ৪৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। কোম্পানির অনুমোদিত মুলধন ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মুলধন ৪৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার রয়েছে সংখ্যা ৪৬ কোটি ২ লাখ। এরমধ্যে ৩০ এপ্রিল ২০১৭ পর্যন্ত উদ্যোক্তা/পরিচালকদের হাতে কোম্পানির ২০ দশমিক ৯৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।