র্যানসমওয়্যার হামলায় ক্ষতি হবে ১২ হাজার কোটি ডলার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী ১০০টিরও বেশি দেশে সম্প্রতি বড় ধরনের যে সাইবার হামলা হয়েছে তাতে ক্ষতির পরিমাণ ১২ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়াবে বলে মনে করছে ব্রিটেনের লয়েড’স ব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা। খবর রয়টার্স ও গার্ডিয়ানের। আজ ৫৬ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন এই সংস্থা বলেছে, এই ক্ষতি ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা হারিকেন ঝড়ে ক্ষতির সমান।
এ ধরনের হামলা আগামী এক দশকে পুরো বিশ্বের ব্যবসা ও সরকারের কার্যক্রমকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে বলেও সংস্থাটি সতর্ক করেছে।
গত কয়েক মাসে পুরো বিশ্ব ২ দফা র্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হয়। বাংলাদেশে কিছু প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার এই হামলার কবলে পড়ে।
লয়েড’স এর দাবি, দুই দফা হামলায় ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে; এটা গড় হিসেবে। তবে মোট ক্ষতি ১২ হাজার ১০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে।
র্যানসমওয়্যারের শিকার হয়ে কার্যক্রম ও সেবা বন্ধ করে দিতে হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানকে। সংরক্ষিত ডেটা হাতিয়ে নিয়ে এ হামলায় বিটকয়েনের মাধ্যমে মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা-মিসিসিপি উপকূলে আঘাত হানা বিখ্যাত হারিকেন ক্যাটরিনা ছিল সম্পদের ক্ষতি হিসাবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘূর্ণিঝড়। প্রায় ১০ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের সম্পদ এতে ধ্বংস হয়েছিল, যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের সংখ্যা ছিল ১৬০০।
এরপর ২০১২ সালে সর্বশেষ বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে যুক্তরাষ্ট্রে; যাতে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
লয়েড’স এর প্রধান নির্বাহী ইঙ্গা বিল জানান, এই প্রতিবেদন সাইবার হামলায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরেছে। যা এ নিয়ে পুরো বিশ্ববাসী অন্তত আরও একবার সতর্ক করবে।
তবে এ ধরনের হামলার ব্যবসা ও অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন তিনি।
র্যানসমওয়্যার কী?
এটি হচ্ছে একটি বিশেষ ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর প্রোগ্রাম। এটি কোনো কম্পিউটারকে আক্রান্ত করার পর বেশ কিছু বিষয় ঘটতে পারে। সাধারণত যে বিষয়টি ঘটে তা হচ্ছে এটি আক্রান্ত কম্পিউটারে থাকা ফাইলগুলো ভিন্ন কোনো ভাষায় এনক্রিপ্ট করে ফেলে, যা উদ্ধারের ক্ষমতা শুধু ওই হ্যাকারের হাতেই থাকে বলে বলা হয়। আক্রান্ত কম্পিউটারের ব্যবহারকারী ওই ফাইল খোলার চেষ্টার আগে হয়তো জানতেও পারবেন না তিনি এ আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু খুলতে গেলেই চাওয়া হবে মুক্তিপণ।