bsec-dse lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের ঋণাত্মক মূলধনধারী (Negative Equity) বিনিয়োগ হিসাবে ১৪০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে ৩২টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও বাকি ১০৮টি ব্রোকারহাউজ। বিএসসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। বছরখানেক আগেও এর পরিমাণ আরও বেশি ছিলো। বেশ কিছু মার্চেন্ট ব্যাংক মূল কোম্পানির সহযোগিতা নিয়ে মূলধন বাড়িয়েছে। কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক তাদের নেগেটিভ ইক্যুইটি তথা গ্রাহকদেরকে দেওয়া মন্দ ঋণ অবলোপন করেছে।

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউজ শেয়ার কেনার জন্যে গ্রাহকদের ঋণ দিয়ে থাকে, যা মার্জিন ঋণ নামে পরিচিত। এ ধরনের গ্রাহকের হিসাবকে বলা হয় মার্জিন একাউন্ট। ২০১০ সালে সূচিত ধসের পর শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় অনেক একাউন্টের অবস্থা এমন হয় যে, গ্রাহকের সব শেয়ারের বাজারমূল্য তার নেওয়া ঋণের চেয়ে কম। গ্রাহকের মূলধন ঋণাত্মক মূলধনে পরিণত হয়।

বিএসইসির সূত্রের দাবি, ২০১০ সালে পরে যে সব বিও হিসাব ঋণাত্মক হয়েছিল; পুঁজিবাজার গতিশীল ও ভালো অবস্থানে আসার কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের ঋণাত্মক হিসাব নেই। তবে বেশিরভাগ হিসাবে ঋণাত্মক রয়েছে সুদের হিসাব।

desh protiklhonসূত্র আরও জানায়, ঋণাত্মক হিসাব কমিয়ে আনার তালিকায় রয়েছে, এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরটিজ, সিটি ব্রোকারেজ, ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ, এমটিবি সিকিউরিটিজ ও এবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ।

বিএসইসির করা ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসাবের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পিএফআই সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠানটির মার্জিন ঋণ হিসাবে মূলধনী লোকসান প্রায় ৮৫ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির মূলধন লোকসান প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। রিলায়েন্স ব্রোকারেজের রয়েছে সাড়ে ৩৫০ কোটি টাকার বেশি।

এছাড়া ব্যাংক এশিয়া ও আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা, ফারইষ্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডের আড়াইশত কোটি টাকা, আইসিবি সিকিউরিটেজ, ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজের প্রতিটিতে মূলধন লোকসান প্রায় ২০০ টাকার ওপরে। আর দেড়শত কোটি টাকার বেশি মূলধন লোকসান রয়েছে আইএফআইসি সিকিউরিটিজের।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুযায়ী কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ওই হিসাবে শেয়ার কেনা-বেচা বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু ২০১০ সালের ধস পরবর্তী বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক দফা ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন করে স্থগিতাদেশের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করে। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন বৈঠকে ওই ধারাটির কার্যকারিতা ৬ মাস স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়, যা ১৮ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা।

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিদ্যমান বাস্তবতায় ঋণাত্মকমূরধনধারী হিসাবে লেনদেনের সুযোগ ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।