BBS20170520151940দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশলী খাতের কোম্পানি  বিবিএস ক্যাবলস শেয়ারের দর কোন কারন ছাড়াই টানা বাড়ছে। ফলে এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি বাজারে নানামুখী গুজব ছড়িয়ে পড়েছে  এ কোম্পানির।

এরকম নানামুখী গুজবে শেয়ারের দর টানা বাড়ছে। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন টানা দর বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির উপর কোন নজরধারী নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ন্ত্রন কাদের হাতে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রকৌশলী খাতের বিবিএস ক্যাবলস লিমিটেড নিয়ে ভিত্তিহীন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে। তবে এসব খবরের উপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যদিও কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দাবী, যে খবর ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ গুজব।

বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন টানা দর বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির উপর কোন নজরধারী নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ন্ত্রন কাদের হাতে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সার্ভিল্যান্স বিভাগ পুঁজিবাজারের অনিয়মরোধে তেমন কোনো কাজেই আসছে না। দাতা সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় পূর্ণাঙ্গ ও অত্যাধুনিক সফটওয়্যার সংযোজনের পরও বাজার তদারকিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না বিএসইসির এ বিভাগ।

সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক স্বল্পমূলধনী ও লোকসানি শেয়ারের দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিএসইসি। এতে করে বাজারের অনিয়মরোধে বিএসইসির এ বিভাগের ভ‚মিকা প্রশ্ন তুলেছেন বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার স্থাপন করে বিএসইসি। পুঁজিবাজারে নজরদারি আরো জোরদার করতে দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় এ সফটওয়্যার চালু করা হয়। ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ১ এর আওতায় নতুন সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার স্থাপনের অর্থ খরচ করা হয়।

কিন্তু বাস্তবে এর কোন অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একাধিকবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়ানো কিংবা নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে মাসের পর মাস স্বল্পমূলধনী ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিকহারে বাড়ার পরও কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান ছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসিকে তেমন কিছুই করতে দেখা যায় না। এ নিয়েও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভের কমতি নেই। এ সময় তারা প্রকৌশল খাতের লোকসানি কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির পরও বিএসইসির নিশ্চুপ ভূমিকার সমালোচনা করেন।

তারা মনে করছেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসি অনিয়ম রোধের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তদন্তের নামে বিনিয়োগকারীদের আশার বাণী শোনাচ্ছে। বিবিএস ক্যাবলস অস্বাভাবিক হারে শেয়ার দর বাড়ার পেছনে অপ্রকাশিত কোন প্রকার কারণ নেই বলে জানিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সোমবার দিনশেষে লেনদেন ও শেয়ার দর বাড়ার শীর্ষে ছিল কোম্পানিটি। তাই কোম্পানিটির ব্যাপারে সর্তক করেছে বাজার সংশ্লিষ্টরা। শাহজিবাজার পাওয়ারের কথা টেনে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, হঠাৎ করে যদি বিএসইসি কোম্পানিটির দর বাড়ার কারণ খুজতে গিয়ে বিবিএস ক্যাবলসের লেনদেন বন্ধ করে দেয়, তখন সৃষ্টি হতে পারে ভিন্ন পরিস্থিতি।

কেননা, এরই মধ্যে বিবিএস ক্যাবলসের বিরুদ্ধে প্রসপেক্টাসে কারসাজির অভিযোগের পাশাপাশি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে। তাই বিনিয়োগকারীদের সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সোমবার কোম্পানির শেয়ার দর ১৩.৬০ টাকা বা ৯.৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে লেনদেন ও টপটেন গেইনারের শীর্ষে উঠে আসে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির আজ মোট ৪৮ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার টাকায় ৩৩ লাখ ৫২ হাজার ৩৬৮টি শেয়ার ৫ হাজার শেয়ার ৮৯৩ বারে লেনদেন হয়েছে। দিনভর কোম্পানির শেয়ার ১৩৭.২০ টাকা থেকে ১৪৯.৭০ টাকায় উঠানামা করে সর্বশেষ ১৪৯.৭০ টাকায় লেনদেন হয়। গতকাল কোম্পানির ক্লোজিং দর ছিল ১৩৬.১০ টাকা যা আহ ক্লোজিং হয় ১৪৯,.৭০ টাকায়।