sibl lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হচ্ছেন দেশের তিনটি বড় শিল্পগ্রুপ। আর এ গুঞ্জন ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সাধারন বিনিয়োগকারীদের মাঝে। তবে সম্প্রতি ব্যাংক খাতের কোম্পানি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আসতে আগ্রহী এস আলম গ্রুপ।

এর মধ্যে এস আলম গ্রুপের কিছু প্রতিষ্ঠান সম্মিলিতভাবে এসআইবিএলের তিন শতাংশ শেয়ার কিনেছে বলে জানিয়েছে কোম্পানি, যা সম্প্রতি ডিএসইর কাছে পাঠানো ব্যাংকটির শেয়ার ধারণসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়। তবে বাজারে গুজব রয়েছে ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ করে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হতে যাচ্ছে দেশের তিনটি বড় শিল্পগ্রুপ এস আলম, ইউনাইটেড গ্রুপ এবং কনফিডেন্স গ্রুপ।

এ প্রসঙ্গে হয় এসআইবিএলের কোম্পানি সচিব হুমায়ুন কবির দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন,  এসআইবিএলের পরিচালনা পর্ষদে কারা যুক্ত হচ্ছে আর কারা যুক্ত হচ্ছে না এ বিষয় আমি কিছুই জানি না। তবে শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো কারণ নেই। কোম্পানির ভালো পারফরম্যান্স থাকায় বরাবরই শেয়ার চাহিদা রয়েছে। প্রতি বছর ভালো লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে। হয়তোবা এ কারনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।

তবে ব্লক মার্কেটে হঠাৎ বড় অঙ্কের লেনদেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এসআইবিএলের কোনো উদ্যোক্তা পরিচালক শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ঘোষণাও দেননি এবং ক্রয়-বিক্রয় করেননি। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এটা করতে পারেন বলে আমাদের ধারণা।’

তিনি আরো বলেন, ‘এসআইবিএল যেহেতু তালিকাভুক্ত কোম্পানি, সেহেতু যে কেউ এর শেয়ার কিনতে পারেন। তবে পরিচালনা পর্ষদে কে বা কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আসছে, সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’

এ সম্পর্কে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক একজন পরিচালক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, ‘এসআইবিএলের পর্ষদে স্থান পেতে অনেকেই আগ্রহী। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের বৃহৎ ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম তিন শতাংশ এবং কেডিএস গ্রুপ পাঁচ শতাংশ শেয়ার কিনেছে। তবে বিদ্যমান পর্ষদ সদস্যদের পদ শূন্য না থাকায় তাদের পক্ষে এখনই পর্ষদে স্থান পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও এসআইবিএলের পর্ষদের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। তাই চাইলেই তাদের পক্ষে পর্ষদে জায়গা করে নেওয়া সম্ভব হবে না।’

এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাবু সম্প্রতি বলেন, ‘আমরা এখন ট্রেডিং ব্যবসায়ের চেয়ে ব্যাংক ব্যবসায় বেশি মনোযোগী। ফলে বিভিন্ন ব্যাংকে আমাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। আগামীতে বিভিন্ন ব্যাংকে আমাদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে। এজন্য শেয়ার কেনা হচ্ছে।’

এদিকে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার কেনাবেচার কোনো ঘোষণা না দিলেও বৃহস্পতিবার ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির প্রায় ১১৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এদিকে কয়েকদিন ধরে কোম্পানিটির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এর নেপথ্যে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে তিনটি শিল্প গ্রুপ যুক্ত হওয়ার গুঞ্জন বাজারে রয়েছে। যদিও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ‘কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই, বলে জানিয়েছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ব্লক মার্কেটে এসআইবিএলের ১১৬ কোটি ৭৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে ব্যাংকটি মোট তিন কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ১০৮টি শেয়ার সাতবার হাতবদল করেছে। এ সময় কোম্পানিটির সর্বনিন্ম ২৮ দশমিক ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৩২ টাকায় শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

অন্যদিকে মূল মার্কেটে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির সমাপনী বাজারদর ছিল ৩৩ দশমিক ৬০ টাকা। অর্থাৎ ব্লক মার্কেট থেকে সংগ্রহের প্রথম দিনেই এ শেয়ারের বিনিয়োগকারীদের শেয়ারপ্রতি এক টাকার অধিক মুনাফা হয়েছে।

গত কয়েক কার্যদিবসে ব্যাংকটির শেয়ারদর ২৬ টাকা থেকে ২৭ শতাংশ বেড়ে ৩৩ টাকা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ‘দর বাড়ার পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই’ বলে জানায় এসআইবিএল।