suchi maynermarদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: জার্মানির শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যগুলোতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিপীড়নে অং সান সুচির নীরব ভূমিকার কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সুচির নৈতিক সাহস নিয়েও।

জার্মানির গণমাধ্যমে কয়েকদিন ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের খবর প্রকাশিত হয়ে আসছে। এতে শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চীর নীরব ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে।

জার্মানির সুড ডয়েচে যাইটিং পত্রিকা এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় প্রদানের খবরটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়।

জার্মানির স্পিগেল পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে গতকাল শুক্রবার ‘মিয়ানমারে রক্তপাতে সুচির নিরবতা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, গভীর রাতে নৌকা পাড়ি দিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করছে। অসহায় এই রোহিঙ্গাদের শোচণীয় পরিস্থিতির উল্লেখ করে পত্রিকাটি গত কয়েকদিনের নিপীড়নের করুণ চিত্র তুলে ধরে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের পুনর্জাগরণের নেতা তিনি (সুচি)। সেনাবাহিনী যখন তাকে গৃহবন্দি করে, তার মুক্তির দাবিতে জেল খাটেন অনেকে, করেন মৃত্যুবরণও। কিন্তু সু চির ঘনিষ্ঠরাই এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার অবস্থানে অবাক৷ ফিঁকে হয়ে এসেছে তাদের স্বপ্নও।

এককালে সু চির ঘনিষ্ঠ সহচর মা থিডার বরাতে ডয়েচে ভেলে বলছে, মাত্র দেড় বছরে পুরো দেশ পরিবর্তন করে ফেলবেন তিনি, তা আমরা আশাও করি না৷ কিন্তু মানবাধিকার রক্ষায় তার অন্তত শক্ত ভূমিকা দরকার ছিল।

ডয়েচে ভেলের আরেকটি প্রতিবেদনে একটু ইতিহাস টেনে বলা হয়েছে, সু চির বাবা জেনারেল অং সানকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মিয়ানমারের স্বাধীনতার লড়াইয়ে একজন নায়ক হিসেবেই দেখা হয়। সেদিকে ইঙ্গিত করে কেউ কেউ বলছেন, সেনাবাহিনীর সাথেই সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সু চি। আবার কেউ ধারণা করছেন, কষ্টে পাওয়া এই ক্ষমতা হারানোর ভয়ই তাকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধা দিচ্ছে।

তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ সেনা শাসনের বিরোধীতা করে ১১ বছর জেল খাটা মিয়ানমারের তাম্পাডিপা ইনস্টিটিউটের প্রধান খিন সাও উইন। তার মতে, এগুলো অযৌক্তিক কথাবার্তা। সু চি এখন আর সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি না। বরং এখনকার সমস্যা হল সু চির নৈতিক সাহসের অভাব।

গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে।পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ অমানবিক ঘটনার কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। এই ঘটনায় অং সান সুচির নীরব অবস্থান তার নোবেল প্রাপ্তি সমালোচনার মুখোমুখী হয়। সুচির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার জন্য নোবেল শান্তি কমিটির কাছে লাখ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে আবেদন জানিয়েছেন।