lali dseদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আগামীর দিন হবে পুঁজিবাজারের। বিনিয়োগকারীরা এই স্বপ্নের দিনটির জন্য অপেক্ষায়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের বিকল্প নেই। দেশের বিনিয়োগ বাড়াতে পুঁজিবাজারই হতে পারে অন্যতম হাতিয়ার। আজ বুধবার বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ– ২০১৭ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিনিয়োগ ও ঝুঁকি শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

বিনিয়োগ ও ঝুঁকি শীর্ষক এ সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন ও সঞ্চালন করেন সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরশাদ হোসাইন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম,

ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বাংলাদেশের প্রধান আলমগীর মোর্শেদ ও প্রাণ আরএফএলের অর্থ পরিচালক উজমা চৌধুরী। মূলপ্রবন্ধে এরশাদ হোসেন বিনিয়োগ কী এবং কেন প্রয়োজন, বিনিয়োগের ঝুঁকি এবং বিনিয়োগের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

এরশাদ হোসেন বলেন, উৎপাদশীল খাতে অর্থ সরবরাহ করে দেশের উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের অন্যতম উপায় হলো পুঁজিবাজার। লাখো মানুষের বিনিয়োগের সুযোগ ও কর্মসংস্থান তৈরি করে পারে পুঁজিবাজার। বিনিয়োগকারীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় অবদান রাখতে পারে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার বাদেও বিনিয়োগের আরও কয়েকটি খাত আছে। সেই খাতের তুলনায় এখানে মুনাফাও বেশি সঙ্গে ঝুঁকিও আছে। আর এখানে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে বিনিয়োগকারীরা। আগামী দিনে দেশের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করা যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালের পুঁজিবাজারে ধ্বসের পর ব্যাপক সংস্কার হয়েছে। এই সংস্কারের ফল আগামী দিনে পাবে বিনিয়োগকারীরা। তবে বিনিয়োগের আগে দেখে শুনে ও বুঝে বিনিয়োগের কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে ২০০৬ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে কমিশন। পরবর্তীতে কিছু সংশোধন করে ২০১২ সালে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগামীতে কিছু বিষয় সংশোধন করে আরও যোগ উপযোগী করা হবে।

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই তালিকায় এখন ৯৯তম। এটি সম্ভব হয়েছে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, কোম্পানির দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্পোরেট গভর্ন্যান্স শক্তিশালীর জন্য।

ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, একটি স্থিতিশীল বাজার গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই এবং মার্চন্টে ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টরা।বাজার এখন যথেষ্ঠ পরিপক্ক। এটি সম্ভব হয়েছে সরকারের ইচ্ছার জন্যই। তবে এখনো কিছু সমস্যা আছে। সেখানে রেগুলেটরদের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এর মধ্যে অন্যতম হলো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আগে বাজারে চলে আসা। আরকেটি হলো কোম্পানির ওয়েবসাইটের আপটেড তথ্য না পাওয়া। বিএসইসিকে এই জায়গায় নজর দেওয়ার আহবান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন যে হারে হচ্ছে, পুঁজিবাজারের প্রবৃদ্ধি সেহারে হয়নি। তবে যে ধরণের বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে তা বাস্তবায়ন করতে পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করলে দিন বদলে যাবে এ খাতের। সব মিলিয়ে দেশের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পুঁজিবাজার মিলে গেলে আগামীর দিনটি হবে পুঁজিবাজারের বা এই খাতের বিনিয়োগকারীদের।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বাংলাদেশের প্রধান আলমগীর মোর্শেদ বলেন, আমাদের বাজার শুধু ইক্যুইটি নির্ভর। জিডিপিতে এই খাতের অবদান বাড়াতে বন্ড মার্কেকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রাণ আরএফএলের অর্থ পরিচালক উজমা চৌধুরী বলেন, তথ্য বা জ্ঞানই টাকা। সুতরাং কোনো জায়গা থেকে আয় করতে হলে সে সম্পর্কে জানার বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের আইন যত নমনীয় আমাদেরটা তত নয়। উন্নয়নের চাকা ঘুরাতে হলে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজারকে বাজারকে কাজে লাগানো যেতে পারে।