bush-srদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় এক নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। তিনি হলেন জর্ডানা গ্রোলনিক। এর আগে অভিযোগ এনেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ছবি ‘টার্ন: ওয়াশিংটনস স্পাইস’-এর অভিনেত্রী হিদার লিন্ড। এর ফলে ৯৩ বছর বয়সী জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন বুধবার।

এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। হিদার লিন্ড অভিযোগ করেছেন, ২০১৪ সালে ছবি তোলার এক অনুষ্ঠানে তাকে পিছন থেকে স্পর্শ করেছেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ।

জর্ডানা গ্রোলনিক বলেছেন, একই রকমভাবে তাকে ২০১৬ সালের আগস্টে যৌন নির্যাতন করেছেন সিনিয়র বুশ। তিনি বলেছেন, মেইনে রাজ্যে একটি অনুষ্ঠানে অভিনয় করছিলেন তিনি। সেখানে থিয়েটারের পিছনের মঞ্চে উঠে যান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। সেখানে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে ছবি তুলতে জড়ো হন সবাই।

জর্ডানা দাবি করেন, সেখানেই তাকে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের হাত তাকে জড়িয়ে ধরে। জর্ডানার ভাষায় আমরা যখন চবি তোলার জন্য হাসছিলাম তখন তিনি আমাদের ওই গ্রুপের কাছে জানতে চাইলেনÑ আমার প্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কে তোমরা জানতে চাও? এ সময় আমি বুঝতে পারি তার হাত আমার শরীরে মাংসের মধ্যে গেঁথে যাচ্ছে। আর তিনি বলছেন, ডেভিড কোপ-এ-ফিল!

জর্ডানা বলেন, সেখানে উপস্থিত সবাই তার কথায় হাসাহাসি শুরু করলেন। অস্বস্তি বোধ হতে থাকে। এতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ফার্স্টলেডি বারবারা বুশও। তিনি বললেন, তিনি নিজেকে জেলে নেয়ার পথ করছেন। এ কথায় আরো হাসাহাসি হলো। তবে এ বিষয়টি প্রেসিডেন্টের সুখ্যাতির দিকে বিবেচনা করে প্রকাশ না করতে সতর্ক করা হয়েছিল জর্ডানাকে। তবে পরে ওই গ্রুপ ছবিটি তিনি প্রকাশ করে দেন সামাজিক সাইট ইন্সটাগ্রামে।

এ বিষয়ে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের মুখপাত্র জিম ম্যাকগ্রা বলেছেন, লোকজনকে স্বাভাবিক করতে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট একই রকম কৌতুক করে থাকেন। মাঝে মাঝে তিনি নারীদের সঙ্গে সৎভাব প্রকাশ করতে তাদের গায়ে আলতো করে থাপড় দিয়ে থাকেন। অনেকেই এটাকে নিরপরাধ হিসেবে দেখেছেন।

আবার কেউ এটাকে অন্যায্য হিসেবে দেখেছে। কারো কাছে তিনি অপরাধ করে থাকলে সে জন্য অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে ক্ষমা চেয়েছেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। ওদিকে একই রকম অভিযোগ করেছেন হিদার লিন্ড। তিনিও ইন্সটাগ্রামে এমন পোস্ট দিয়েছিলেন। তবে তা এখন মুছে দিয়েছেন তিনি।

এতে তিনি লিখেছিলেন, চার বছর আগে একটি ঐতিহাসিক টেলিভিশন শো প্রমোট করতে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ এসেছিল আমার। ওই অনুষ্ঠানে তিনি আমাকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। তিনি আমার সঙ্গে করমর্দন করেন নি। তার পাশে তখন তার স্ত্রী বারবারা বুশ। তিনি একটি হুইল চেয়ারে বসা অবস্থায় পিছন থেকে আমাকে স্পর্শ করলেন। আমাকে বললেন একটি নোংরা কৌতুক। তারপরই ছবি তোলা হলো।

তিনি আমাকে আবার স্পর্শ করলেন। আর করো না- এমনটা বোঝানোর জন্য বারবারা বুশ তার চোখ রাঙালেন। তার নিরাপত্তা রক্ষী আমাকে বললেন, ছবি তোলার জন্য তার পাশে আমার আর দাঁড়ানো উচিত হবে না। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘টার্ন: ওয়াশিংটন স্পাইস’-এর সহ অভিনেতা কেভিন ম্যাকনালি। তিনিও ছবিতে রয়েছেন। তিনিও যৌন নির্যাতনের এমন অভিযোগের সমর্থন দিয়েছেন।

তিনি টুইটে বলেছেন, হিদার গ্লিন্ড-এর জন্য আমাদের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন রয়েছে। তিনি যে অভিযোগ করেছেন তার পুরোটাই সত্যি। তাকে আরো সমর্থন দিয়েছে ‘ওয়াশিংটন স্পাইস’ বইয়ের লেখক আলেকজান্দার রোজ।

এর জবাবে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বুশ কখনো, কোনো অবস্থাতেই ইচ্ছাকৃতভাবে এমন আচরণ করেন নি। যদি তার আচরণে লিন্ড আহত হয়ে থাকেন তাহলে তিনি বিনয়ের সঙ্গে ক্ষমা চেয়েছেন।