alig-lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সমন্বিত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে নিজ দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করছে বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। ওই তথ্য দিয়ে দলটি কেন্দ্রীয়ভাবে একটি শক্তিশালী ‘ডাটাবেজ’ তৈরি করবে। আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গত ২০ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের হাতে দপ্তর সম্পাদক একটা আবেদনপত্র তুলে দেন। তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করে সেই আবেদনপত্র দপ্তরে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তথ্য সমন্বয়হীনতার কারণে বিষয়টি ধীর গতিতে চলছে। ডাটাবেজটি তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে দলের গবেষণা সেল হিসেবে পরিচিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।

সূত্র জানায়, অনেক আগেই থেকে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়েছিল এবং পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা ভালো হওয়ায় প্রকল্পটি এখন দেশব্যাপী চলছে। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, থানা/উপজেলা, পৌরসভা, জেলা এবং সিটি করপোরেশন এবং কেন্দ্র পর্যন্ত সব নেতার জন্য আলাদা আলাদা প্রোফাইল তৈরি হবে।

জানা গেছে, প্রত্যেকের ফাইলে নাম, পদের নাম, ছবি, স্থায়ী ঠিকানা ও অস্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল অ্যাড্রেস, ফেসবুক আইডি লেখা থাকবে।

সূত্র আরো জানায়, বর্তমান রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। আশা করা হচ্ছে- চলতি সপ্তাহে রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হবে। রংপুর বিভাগ শেষ হলে নতুন করে আরো দুটি বিভাগের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। আগামী মার্চের মধ্যে দেশের সব জেলার নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

তথ্য সংগ্রহ ও ডাটাবেজ তৈরির কাজে সংশ্লিষ্ট এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। অথচ নিজ দলেরই এখন পর্যন্ত কোনো ডাটাবেজ নেই। এ কথা মাথায় রেখে এবং সারাদেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ গড়ে তোলার জন্যই এই তথ্য সংগ্রহ ও ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রত্যক জেলায় ৭-১০ জনের একটি দল তথ্য সংগ্রহের যাবে। ইতিমধ্যে ১০০ জনের মতো সাবেক ছাত্র নেতাকে এ কাজের জন্য বাছাই করা হয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রথম দফায় ৬০ জনকে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রত্যেকটি জেলার জন্য একজন টিম লিডার থাকবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একটি উপজেলার তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব একজনের থাকবে। তবে প্রয়োজন হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক উপজেলার জন্য একাধিক তথ্য সংগ্রহকারীও নিযুক্ত হতে পারেন।

আওয়ামী লীগের অপর এক নেতা জানান, মোবাইল-ইন্টারনেটের এই যুগেও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা তৃণমূলে পৌঁছাতে অনেক সমস্যা হয়। তাই দেশের সব নেতাদের এক সুতোয় বাঁধতে এটা অনেক বড় একটি কাজ হবে।