dse-cseদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নতুন বছরে পুঁজিবাজার নিয়ে ব্যাপক প্রত্যাশা পোষণ করছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সর্বস্তরের বিনিয়োগকারীই এ নিয়ে নতুন করে বিনিয়োগের ছক কষছেন। অনেকটা স্থবির অবস্থায় একটি বছর পার করার পর নতুন বছরে বিনিয়োগকারীর ও বাজারসংশ্লিষ্টরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে গতি ফিরে আসার একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লোকসান পুষিয়ে নিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও সক্রিয় হয়ে উঠবেন এমন প্রত্যাশা বাজার সংশ্লিষ্টদের।

এছাড়া আগামীর দিন হবে পুঁজিবাজারের। বিনিয়োগকারীরা এই স্বপ্নের দিনটির জন্য অপেক্ষায়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের বিকল্প নেই। দেশের বিনিয়োগ বাড়াতে পুঁজিবাজারই হতে পারে অন্যতম হাতিয়ার।

পুঁজিবাজার নিয়ে নতুন বছরে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয় এম সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী নুরুল আজম দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, উৎপাদশীল খাতে অর্থ সরবরাহ করে দেশের উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের অন্যতম উপায় হলো পুঁজিবাজার।

লাখো মানুষের বিনিয়োগের সুযোগ ও কর্মসংস্থান তৈরি করে পারে পুঁজিবাজার। বিনিয়োগকারীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রেখে নীতি নির্ধারকদের আরো আন্তরিকতার প্রয়োজন হবে বলে তিনি মনে করেন।

ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, একটি স্থিতিশীল বাজার গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই এবং মার্চন্টে ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টরা। বাজার এখন যথেষ্ঠ পরিপক্ক। এটি সম্ভব হয়েছে সরকারের ইচ্ছার জন্যই। তবে এখনো কিছু সমস্যা আছে। সেখানে রেগুলেটরদের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এর মধ্যে অন্যতম হলো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আগে বাজারে চলে আসা। আরকেটি হলো কোম্পানির ওয়েবসাইটের আপটেড তথ্য না পাওয়া। বিএসইসিকে এই জায়গায় নজর দেওয়ার আহবান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন যে হারে হচ্ছে, পুঁজিবাজারের প্রবৃদ্ধি সেহারে হয়নি। তবে যে ধরণের বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে তা বাস্তবায়ন করতে পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করলে দিন বদলে যাবে এ খাতের। সব মিলিয়ে দেশের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পুঁজিবাজার মিলে গেলে আগামীর দিনটি হবে পুঁজিবাজারের বা এই খাতের বিনিয়োগকারীদের।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাবেক সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, ‘নতুন বছরে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার প্রত্যাশা করি। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগোলে ভবিষ্যত্ পুঁজিবাজার আরো ভালো যাবে। ২০১৮ সালে হলো বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার বছর। নতুন বছরে ভলো ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসবে। এতে বিনিয়োগকারীরা আশান্বিত হবেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান বলেন, নতুন বছর ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারের টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রেখে সামনে এগিয়ে নেয়াই মূল লক্ষ্য হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে এই লক্ষ্য অর্জন করা হবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে ২০১৭ সালে দেশের শেয়ারবাজার এক নতুন মাত্রায় পৌছেছে ৷ এরই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরে শেয়ারবাজারের টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রেখে সামনে এগিয়ে নেয়াই হবে। এই অগ্রসরমান বাজারের গতিশীলতা ধরে রাখতে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে শেয়ারবাজার একটি বড় মাধ্যম হতে পারে৷

তিনি জানান, বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশ অবকাঠামো খাত উন্নয়নে শেয়ারবাজারকে কাজে লাগাচ্ছে৷ বাংলাদেশেও একই ধরনের উদ্যোগ নেয়া হলে অর্থনীতির নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করা সম্ভব৷

তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে দুই-একবার সাময়িক দরপতন দেখা দিলেও বাকি সময় গতিশীলতার মধ্যেই কেটেছে। এসময় বাজারের লেনদেন, মূল্যসূচক এবং বাজারমূলধনসহ সবদিক থেকেই রেকর্ড করে নতুন উচ্চতায় অবস্থান করে৷