Basundhara Newsদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় বিডিং সম্পন্ন করা বসুন্ধরা পেপার মিলের বিডিং বাতিলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি এ কে এম মিজান-উর-রশীদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বিএসইসির কাছে পাঠানো হয়।

বিএসইসিতে দেওয়া চিঠিতে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুঁজিবাজারে স্মরণকালের মহাধসে পড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে ২৪ জন বিনিয়োগকারী আত্মাহুতি দিয়েছেন। বহু বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

২০০৯-১০ সালে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি ও ডাইরেক্ট লিস্টিং প্রবর্তনের কারণে শেয়ারবাজার অতিমূল্যায়িত হয়। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির অন্যতম কারণ অতিরিক্ত প্রিমিয়ামসহ ইস্যুকৃত শেয়ার বিনিয়োগ করা।

অতিরিক্ত প্রিমিয়ামের বদনাম থেকে রেহাই পেতে এবং স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ সংশোধন করে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি চালু করা হয়। এর আওতায় প্রথম আমরা নেটওয়ার্কস কোম্পানি বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পায়।

যেখানে বিডিং প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছিল, এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আপনার বরাবরে আবেদন করেছিলাম, কিন্তু অনিয়মের তদন্ত করেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সম্প্রতি বসুন্ধরা পেপার কোম্পানি লিমিটেডের বিডিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

এ কোম্পানির ইপিএস ১.৪৬ টাকা এবং এনএভি ৩০.৪৯ টাকা (সমন্বিতসহ) এবং এনএভি ১৫.৭৯ টাকা (সমন্বয় ছাড়া)। অথচ ১৬ অক্টোবর বিডিং শুরু হলে একজন যোগ্য বিনিয়োগকারী এই শেয়ারটি প্রথম ৮৬ টাকায় বিডিং করে এবং সর্বোচ্চ ৯০ টাকায়ও শেয়ারটি বিডিং হয়েছে। যে কোম্পানির ইপিএস ১.৪৬ টাকা ও এনএভি ৩০.৪৯ টাকা সেই কোম্পানির শেয়ার ৮৬ টাকা, ৯০ টাকায় যোগ্য বিনিয়োগকারীরা কিনতে চাওয়াটা অস্বাভাবিক নয় কি?

কিছু কিছু যোগ্য বিনিয়োগকারী ১২ টাকা, ১৫ টাকা ও ২০ টাকা দরে বিডিং করেছে, আবার কিছু কিছু যোগ্য বিনিয়োগকারী একই শেয়ার ৮৬ টাকা ও ৯০ টাকায় বিডিং করছে। এসব যোগ্য বিনিয়োগকারীরও যোগ্যতা ও আর্থিক সক্ষমতা আছে কি না, সেটাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন। তৃতীয় দিন শেষে শেয়ারটির কাট অব প্রাইজ ৮০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।

আমরা মনে করি, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ, ইস্যু ম্যানেজার, মার্চেন্ট ব্যাংক ও কতিপয় যোগ্য বিনিয়োগকারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শেয়ারের দর অতি মূল্যায়িত করেছে এবং বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়াকে কলঙ্কিত করেছে। এই অতিমূল্যায়িত কোম্পানি অনুমোদন পেলে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ কে এম মিজান-উর রশীদ চৌধুরী বলেন, বসুন্ধরা পেপারের বিডিংয়ের ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা পাবলিক ইস্যু রুলসের পরিপালন করেনি।

কোম্পানি ইপিএস ও এনএভি’র যৌক্তিকতা যাচাই না করেই বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানিটির বিডিং করেছেন। এ কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত হলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আমরা বিএসইসি’র কাছে কোম্পানিটির বিডিং বাতিলে চিঠি দিয়েছি।