bsec-dse lagoফয়েজ মাহমুদ, ফাতিমা জাহান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী ও পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।

একটি দেশের অর্থনীতির জন্য শেয়ারবাজার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। শেয়ারবাজার শক্তিশালী হলে দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সহযোগীতায় শেয়ারবাজারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট আন্তরিকতার প্রয়োজন।

কারন আগামী নির্বাচনের আগেযে কোন মুল্যে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে হবে। কারন বিদায়ী বছরে আশা নিরাশার বিরাজ ছিল পুঁজিবাজারে। তবে ২০১৭ সালের শুরুতে অনেকটাই আশাবাদী ছিলেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বছর শেষে হতাশ তারা।

বাজার-বিশ্লেষকরা মনে করেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা যায়নি। ফলে আশা-নিরাশার দোলাচলে কেটেছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের। তার পরও নতুন বছরে তারা আশায় বুক বেঁধেছেন। পুঁজিবাজার ভালো যাবে। এ বছরের শেষদিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ কারণে সরকারও পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হবে।

বিদায়ী বছরে পুঁজিবাজারে বেশ কিছু নতুন কোম্পানির আগমন ঘটেছে। তবে কোম্পানির পারফরম্যান্সে উন্নতি না হওয়ায় অর্ধশতাধিক কোম্পানি নিরাশ করেছে বিনিয়োগকারীদের। তারা সদ্যসমাপ্ত বছরে কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। অপরদিকে বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, বছরের শুরুতেই বাজার হযবরল বিরাজ থাকলেও খুব শিগরিই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

তাদের মতে, নির্বাচন সামনে রেখে বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়বে। এর একটি অংশ আসবে পুঁজিবাজারে। যারা নির্বাচন করবেন তাদের আত্মীয়স্বজনরা বিদেশ থেকে অর্থ পাঠাবেন। এর একটি অংশও পুঁজিবাজারে যাবে।

সরকারও পুঁজিবাজার চাঙ্গা রাখতে উদ্যোগী হবে। কেননা ভোটের বছর সব সরকারই পুঁজিবাজার ভালো রাখার চেষ্টা করে। পুঁজিবাজারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বিনিয়োগকারী ও তাদের ওপর নির্ভরশীল মিলে প্রায় ১ কোটি ভোটার রয়েছে। এ কারণে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের তুষ্ট করতে পারলে এই ভোটের একটি অংশ সরকারের দিকে ঝুঁকবে।

এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমেদ রশিদ লালী বলেন, বাজার স্ট্যাবল ছিল। বিনিয়োগকারীদের বিচরণ বেড়েছে। আশা করছি ভোটের বছর পুঁজিবাজারের জন্য ভালো যাবে। সরকারও উদ্যোগী হয়েছে। এর সুফল পড়বে নির্বাচনী বছরে।

বিএমবিএর নব-নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, নির্বাচনী বছর পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইসিবি মরিয়া হয়ে কাজ করছে। এর সুফল ভুব শিগরিই পাওয়া যাবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আমরাও কাজ করতে চাই। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য শেয়ারবাজার অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকার্সরা চাহিদা ও সমন্বয় উভয় বিষয়ে কাজ করে। আমাদের এই কমিটি সবাইকে নিয়ে চাহিদা ও সমন্বয়ের কাজটি সঠিকভাবে করতে চায়। একটি দেশের অর্থনীতির জন্য শেয়ারবাজার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। শেয়ারবাজার শক্তিশালী হলে দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সহযোগীতায় শেয়ারবাজারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এর জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগীতা চান তিনি।

শাকিল রিজভী ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিল রিজভী দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের মুল চাবিকাঠি পুঁজিবাজার। আর সরকার যে হারে দেশের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য নিচ্ছে তাতে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের বিকল্প নেই। তাই নির্বাচনী বছর পুঁজিবাজার চাঙ্গা থাকবে এটা প্রত্যাশা সবার।

এম সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী নুরুল আজম বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকার আন্তরিক। নির্বাচনী বছর সরকার যে কোনমুল্যে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা রাখবে এ প্রত্যাশা আমাদের। তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি তারল্য সরবরাহ বাড়াতে হবে। লেনদেনকে যে কোন মুল্যে এক হাজার কোটি টাকার ঘরে নিতে হবে।

এমেস সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, পুঁজিবাজার গত কয়েকদিনে টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আতঙ্কিত। তবে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। নির্বাচনী বছর পুঁজিবাজার ভালো যাবে এ প্রত্যাশা সকলের। কারন পুঁজিবাজারে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর ফেসভ্যালুর কাছাকাছি। এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়।