tomazi haqueমোবারক হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপনির্বাচনে মূল ফ্যাক্টর হবে তরুণ ভোটাররা। রাজধানীতে এখন উত্তর সিটি নির্বাচনটা দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে তুমুল প্রচারনা আর আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠছে। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে মিডিয়া এমনকি সিটি শহরের বাহিরেও মানুষজন এই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কৌতুহল রয়েছে। কে হতে যাচ্ছে আগামী ঢাকার উত্তর সিটির নগরপিতা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সতর্কতা অবলম্বন করে পরীক্ষিত প্রার্থী বাছাইয়ে সময় নিচ্ছে আ’লীগ। ঢাকা উত্তর সিটিতে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য জনসম্পৃক্ত, জনপ্রিয়, নিজস্ব ভোট ব্যাংকের অধিকারী ও ভোটের রাজনীতিতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিকে মনোনয়নের প্রয়োজন অনুভব করেই এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা প্রায় এক ডজন হলেও সাধারণ ভোটারদের দৃষ্টিতে আদম তমিজির নৌকা প্রতীক পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন। তারা বলছেন, নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারে এমনই একজন দক্ষ ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী দরকার আওয়ামী লীগের।

সে ক্ষেত্রে তারা তরুন আ’লীগ নেতা আদম তমিজি হক এগিয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে আদম তমিজি হক এখন পর্যন্ত নানা জরিপে এগিয়ে রয়েছে। হক গ্রæপের স্বত্বাধিকারী সফল ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আদম তমিজি হক প্রায় এক বছর ধরে নির্বাচনী হোম ওয়ার্ক চালিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা উত্তরের নির্বাচনের পুরো ম্যাপ করে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদম তমিজি হকের বিষয়ে আওয়ামী লীগের ওপর মহল নির্বাচনী কর্মকান্ডে খুশী। তাছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ, তাঁতী লীগ এবং আওয়ামী লীগের উত্তরের নেতারাও তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন অনেক দিন ধরে।

আওয়ামী লীগের উত্তরের নেতা-কর্মীরা সবাই চান সমাজসেবক আদম তমিজি হক উত্তরের মেয়র এর পদে আ’লীগের মনোনয়ন পেলে দলের ইমেজ বাড়বে বলে তারা মনে করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের একটি হাইব্রিড চক্র আদম তমিজি হক এর জনপ্রিয়তায় ইর্ষাম্বিত।

page 8 (1)এদিকে সিটি নির্বাচনে ভোটার উৎসাহটা সকলের মনেই বিরাজ করছে। এবার নির্বাচনে ভোটার তালিকায় তরুন প্রজন্মের অনেক ভোটার আছে যারা কিনা এবার প্রথমবারের মত ভোট প্রয়োগ করবে। ঢাকার প্রায় ৪৫ লাখ ভোটারের মধ্যে ১৩ লাখই তরুণ। এর মধ্যে উত্তরে প্রায় ৭ লাখ তরুন ভোটার রয়েছেন। তাই তরুন প্রজন্মের এই ভোট ব্যাংক বেশ গুরুত্বপূর্ন। ভাল করেই আঁচ করা যাচ্ছে যে এবারকার এই নির্বাচনে তরুন প্রজন্মের ভোটই নির্বাচন করবে যোগ্য প্রার্থী।

কোন প্রর্থীর হাতে ঢাকা নগরীর দায়িত্ব পালন করার ভার তুলে দেয়া হবে এ অবস্থায় নির্বাচনের আমেজ সরগরম হয়ে উঠছে সবার মাঝে। এবার আর অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়া বা লটারী ধরার মতো করে ভোট দেয়া নয়। সকল দিক বিচার বিশ্লেষন করে ভোট দিয়ে উপোযুক্ত প্রার্থীই নির্বাচীত হবে নতুন ও তরুন প্রজন্মের হাতে। আর এ তরুন ভোটারদের আগ্রহ বাড়ছে আদম তমিজির দিকে।

তবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তরুণ ভোটারের হাতেই আগামী দিনের ক্ষমতার চাবি বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন দশম সংসদ থেকে এ পর্যন্ত যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তারাই আগামী দিনে ‘দেশের নেতৃত্ব নির্বাচনে’ মূল ভূমিকা পালন করবেন। তরুণরা আগামীর বাংলাদেশ কেমন দেখতে চান, সেই অনুযায়ী নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অনেকের দৌড়ঝাপ দেখা গেলেও আলোচনায় আছেন তরুণ প্রার্থীরা। দুটি দলেই নতুন ও উদীয়মান রাজনীতিকের মূল্যায়নের কারণে তরুণ প্রার্থীরা আগামীতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

ইতোমধ্যে এসব প্রার্থীদের অনেকেই স্ব স্ব এলাকাতে অবস্থান শক্ত করে তুলেছে। ইতোমধ্যে ফেসবুকেও তরুণ প্রার্থীদের পক্ষে আগাম প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আদম তমিজি হক। দেখতে সুদর্শন এ প্রার্থীর পক্ষে ইতোমধ্যে ব্যাপক জনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর পক্ষে ফেসবুকে চলছে প্রচারণা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, তরুণ হিসেবে তরুণ ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তে আর ভোট আদায় করতে তমিজি হকের কোন বিকল্প নেই। এছাড়া আদম তমিজি হকের পক্ষে ছাত্রলীগ রও যুবলীগ তাতী লীগ প্রচুর প্রচারণা করছে। তরুণদের কাছেও আদম তমিজি একটি জনপ্রিয় নাম।

এদিকে দেশের স্বনামধন্য হক গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচলাক আদম তমিজি হক। স্বাধীনতা অব্যবহিত পরে ১৯৭৬ সালে জন্ম নেয়া আদম তমিজি হক নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাবার মতোই একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে। ২০১০ সালে বাবার কাছ থেকে হক গ্রæপের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তির পরিমাণ বাড়িয়েছেন ২৫ গুণ।

নিজের মেধা, দক্ষতা ও উৎসর্গের মাধ্যমে নিজের প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে যেতে চান অনন্য এক উচ্চতায়। আদম তমিজি হকের সঙ্গে তার পারিবারিক, ব্যবসায়িক ও সামগ্রিক বিষয় নিয়ে সম্প্রতি কথা হয় তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হক সেন্টারে। মাত্র ৯ বছর বয়সের পাড়ি জমান লন্ডনে। সেখানেই তিনি তার লেখাপড়া শেষ করেন। চাইলে সেখানেই স্থায়ী হতে পারতেন।

দীর্ঘ সময় প্রবাসে কাটালেও মাতৃভূমির প্রতি টান বিন্দুমাত্র কমেনি তমিজি হকের। দেশের প্রতি ভালবাসার টানে ফিরে আসেন দেশে। বাবার কাছ থেকে বুঝে কেন হক গ্রæপের দায়িত্ব। হক গ্রæপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিজের মতো করে।

ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে নিজেকে আলোকিত করার প্রয়াস আদম তমিজি হকের। নিজেকে নিবেদিত করেছেন সাধারণ মানুষের সেবায়। বিভিন্ন সামাজিক এবং উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে বরাবরাই অবদান রেখে চলেছেন।

দেশে বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডারে অবদান রেখেছেন নিজেদের সাধ্যমত। আবার সাম্প্রতিক সৃষ্টি রোহিঙ্গা সমস্যায়ও দেখা গেছে তার উদার অংশগ্রহণ। নিজের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে গেছেন দুঃস্থ রোহিঙ্গাদের সেবায়।

ব্যারিস্টার বাবা তমিজুল হক ভারতের আসামের বাসিন্দা হলেও দেশভাগের আগেই ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে হক গ্রæপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। নিজ সততা, শ্রম ও মেধা দিয়ে কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত করে যান। সেই সফলতাকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াসে নিবেদিত আদম তমিজি হক। ক্রেতা সাধারণের চাহিদাকেই মূল প্রাধান্য দেয়া হয় বলে জানান তমিজি হক।

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রেতাসাধারণকে ঠকানোর ব্যবসায় করি না। আমাদের একজন ক্রেতাও যেন আমাদের পণ্য থেকে প্রতারিত না হন সেদিকে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ জীবনের শৈশব ও কৈশোর প্রবাসে কাটালেও নিজের মন বরাবরই দেশে পড়ে ছিল বলে জানান তিনি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বাবার ছোটবেলা থেকেই খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিলেন। সেই সূত্রে পারিবারিকভাবেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত।

তিনি বলেন, ‘আমি ৯ বছর বয়সে বিদেশ গমন করেছি এবং সেখানেই পড়াশোনা শেষ করেছি। কিন্তু মন পড়ে ছিল দেশে। সময় ও সুযোগ পেলেই দেশে চলে আসতাম। দেশ আমাকে সব সময়ই টানতো।

আমি পারিবারিকভাবে দেশকে চিনেছি ও বুঝেছি বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে। আমার বাবার কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনেছি। আমার বাবার কলকাতায় লেখাপড়া করার সুবাদে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সম্পর্ক তৈরি হয়। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, এটাই আমি আমার বাবার কাছ থেকে বুঝেছি। কারণ, বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’

যে মানুষটি দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে সেই মানুষটিকে এই দেশের কিছু ষড়যন্ত্রকারী হত্যা করেছে। এই বিষয়টি সবসময়ই আমার মনকে পীড়া দেয়। তাই আমার লক্ষ্য ছিল, বিদেশে পড়াশোনা করলেও দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন, সেই সোনার বাংলা গড়ার জন্য আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব অবদান রেখে যাবো।

ব্যবসায়ী হিসেবে দক্ষ আদম তমিজি হকের জনসেবায়ও সুনাম রয়েছে। টঙ্গী, গাজীপুরের বেশ কয়েকটি মসজিদের উন্নয়নসহ আঞ্জুমান হেদায়াতুল উম্মত এতিমখানার তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। শীতার্ত মানুষের জন্য প্রতিবছর কম্বল বিতরণ করে আসছেন। কক্সবাজারের হিমছড়িতে তমিজুল হক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।

ব্যবসায়িক ও জনসেবামূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি ইচ্ছা আছে নিজেকে মূলধারা রাজনীতিতেও প্রতিষ্ঠিত করতে। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে জনসেবায় কাজ করতে চান। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রতি দেশের মানুষের এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা বিদ্যমান। তবে এই সব নেতিবাচক ধারণা একমাত্র তরুণ ও আদর্শবান রাজনীতিবিদরাই দূর করতে পারেন বলেই তার বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান দেশ পরিচালনার জন্য অ্যাডভান্সড এডুকেইটেড ও সফিস্টিকেটেড লোক প্রয়োজন। যার সবগুলো গুণই তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে বিদ্যমান। কয়েক বছর পরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে চলে যাবে। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই।’

সবকিছু ঠিক থাকলে এবং দেশনেত্রী শেখ হাসিনা চাইলে ঢাকা উত্তর আ’লীগের নৌকার মনোনয়ন পাবেন। তবে রাজনীতিতে আসলে নিজের জন্য নয়, বরং জনগণের জন্যই কাজ করবেন বলে জানালেন আদম তমিজি হক। যদিও বাংলাদেশের রাজনীতির সবকিছুই তার কাছে ভাল লাগে না।

এর মধ্যে সবচেয়ে লজ্জাজনক ব্যাপার হলো জাতির জনকের শাহাদাৎ দিবস ১৫ই আগস্টে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া জাকজমকপূর্ণ ভাবে জন্মদিন পালন করে থাকেন। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সত্যিই লজ্জার। এগুলো আমাদের দেশের ও দেশের বাইরের মানুষের কাছেও বিব্রতকর।

এ সময় আদম তমিজি হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে এবং ঢাকা উত্তরের জনগণের উন্নয়নের জন্য তিনি কাজ করতে চান। তিনি মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশন এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তার সর্বোচ্চটি দিয়ে কাজ করবেন বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।