job mmদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশে দিন দিন বাড়ছে বেকারত্ব। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, বেকারের সংখ্যা এখন ২৬ লাখের বেশি। যদিও জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা’র মতে, দেশে বেকার কমপক্ষে দেড় কোটি মানুষ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা হাজার হাজার বেকার তৈরি করছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেও মিলছে না সময়মতো কাঙ্খিত চাকরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলছেন, পাঁচ বছর ধরে পড়া বিষয় চাকরি ক্ষেত্রে বাস্তবে কাজে আসছে না। বাস্তবে এসে দেখা যাচ্ছে- পুরো অন্য জিনিস পড়তে হচ্ছে। কাঙ্খিত সময়ে চাকরি না পাওয়ায় হতাশা তৈরি করে। যা অনেক সময় আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে বাধ্য করে। শিক্ষা ব্যবস্থা তাই একটু পরিবর্তনের দাবি তাদের।

২০১৫ সালে করা বিবিএসে’র সর্বশেষ জরিপ বলছে, দেশে উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার নয় শতাংশ। আর মাধ্যমিক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকার ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। বিশ্বের ২০টি সর্বাধিক বেকারত্বের দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম।

এদিকে ‘জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা’- ইউএনডিপি দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য, দেশে ১৯৯০ থেকে ৯৫ সালে বেকার ছিল ২৯ লাখ। ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তা সাড়ে চার গুণ বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি ৩২ লাখে। যা বর্তমানে দেড় কোটি ছাড়িয়েছে। আর স্নাতক পাশ করাদের মধ্যে এখনও বেকার ৪৭ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের কারিগরি ও সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে বাজারের চাহিদার মধ্যে একটি বিরাট ব্যবধান রয়ে গেছে। সেটার জন্য আমি শিক্ষা ব্যবস্থাকেই দায়ী করবো।
এই অর্থনীতিবিদের কথায় সায় দিলেন দেশের অন্যতম বড় চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান মাতলুব আহমাদও।

তিনি বলেন, একটা চাকরির জন্য প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার আবেদন চলে আসে। কিন্তু আমরা আমাদের চাহিদামতো কর্মী পাচ্ছি না।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষায় পাস করা ছেলেমেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু যখন আলাদাভাবে পেপার মিলে কারিগরি কাজের জন্য কাউকে খুঁজছি, তখন পাচ্ছি না। আমাদের বিদেশ থেকে তখন লোক আনতে হচ্ছে।

দেশের শিক্ষিতরা যেখানে কাঙ্খিত চাকরি পাচ্ছেন না, সেখানে মাত্র দুই লাখ বিদেশি পেশাজীবী বাংলাদেশ থেকে আয় করে নিয়ে যাচ্ছেন ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

পিকেএসএফের কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, এ অবস্থায় বিদেশি পেশাজীবীরা যা করছেন, সে সম্পর্কে দক্ষ হয়ে বাংলাদেশিরাও তা করতে পারেন। সব হয়তো একসঙ্গে হবে না, তবে এদিকে আমাদের নজর দিতে হবে।
এ লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছেও বলে জানান তিনি।

এক্ষেত্রে এসএমই ঋণের ব্যবস্থাপনাকে আরো সহজ করে দেশব্যাপী উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারকে আরো তৎপর হতে হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।