35দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শনিবারও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন । শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ’ ব্যানারে অনশন কর্মসূচি শুরম্ন হয়।

গত ২৭ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর শুক্রবার আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরম্ন করে শিক্ষার্থীরা।
সংগঠনটির পক্ষে সঞ্জয় দাস নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, গড় আয়ু যখন ৪৫ ছিল তখন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর, যখন পঞ্চাশ হলো তখন ৩০ বছর করা হলো। এখন গড় আয়ু ৭২ বছর কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের বয়স অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। আমাদের চাকরির বষয়সীমা ৩৫ বাস্তবায়ন না হলে আমরা ঘরে ফিরবে না।

সবুজ ভূঁইয়া নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও বয়সসীমা ৩০ ছাড়া নিয়োগ দেয় না। এতে বেসরকারিতেও কর্মের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। তাই অতি দ্রম্নত বয়সসীমা ৩৫ বছর করা দরকার।

আমরণ অনশনে অংশ নেয়া ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, উন্নত বিশ্বে যেখানে ৪০-৪৫ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা, সেখানে আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি।

বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা জরম্নরি হয়ে পড়েছে।  কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত্ম আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এর আগে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা থেকে একযোগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছিল।

সম্প্রতি সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩০ থে কে ৩৫ পর্যন্ত করার দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের প্রতি দলমত নির্বিশেষে সব সচেতন মানুষের সমর্থন রয়েছে।

জিয়াউল হক মৃধা বলেন, রাজধানী ঢাকার শাহবাগে আন্দোলনকারীদের ব্যানারে বড় করে লেখা ছিল, `মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বয়স বাড়ান, জীবন বাঁচান’। পুলিশি হস্তক্ষেপে আন্দোলনকারী নেতাদের আটক করে অবরোধ থামিয়ে দেওয়া হলেও বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, সেশনজন, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে অনেক চাকরিপ্রার্থীর বয়স ৩০ পেরিয়ে যায়। এ কারণে তারা সরকারি চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। অপরদিকে, অনেক প্রতিভাবান ছেলে শুধু বয়সের হেরফেরের কারণে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি থেকে বঞ্চিত হন। ফলে রাষ্ট্রও বঞ্চিত হয় তাদের সেবা থেকে। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স আমাদের চাইতে বেশি হলেও আমাদের দেশে কম। এটি একটি ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা। যার ফলে শিক্ষিত বেকারে দেশে ছেয়ে গেছে। অপরদিকে, সব সরকারি দফতরে শূন্য পদের ছড়াছড়ি। আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন- চাকরিকালীন অবসরের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

অথচ চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়ানো হবে না কেন? অবরোধকারীদের দাবি এখন সময়ের দাবি। আমার মনে হয়, অবরোধকারীদের প্রতি সচেতন সব মানুষের সমর্থন রয়েছে। এমতাবস্থায় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।