CSE-Final-Logoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি উত্তোরণে বাজারে স্থিতিশীল ফিরিয়ে আনতে অর্থমন্ত্রীর কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। পুঁজিবাজারে যখন বিনিয়োগকারীদের যখন রক্তরক্ষণ চলছে ঠিক সেই মুহুর্তে সিএসই এ পদক্ষেপ সাধুবাদ জানিয়েছে বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে পুঁজিবাজার উন্নয়নে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে চারটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। মঙ্গলবার সিএসইর চেয়ারম্যান এবং অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই ড. এ কে আবদুল মোমেনের সই করা একটি চিঠির মাধ্যমে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

সিএসই থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রীর কাছে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ ব্যাংক’ এক্সপোজার লিমিট রিভিউ করা, ন্যাশনাল কো-অডিনেটিং কমিটি গঠন করা, আইসিবিকে আরও শক্তিশালী করা এবং বাজার উন্নয়নের বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিসহ দেশের সব রেগুলেটরি অথরিটিকে সমন্বয়ের মাধ্যমে যে কোনো পলিসি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো রেগুলেটরি মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। রেগুলেটরি মূলধনের মধ্যে রয়েছে পরিশোধিত মূলধন, অবণ্টিত মুনাফা, প্রিমিয়াম আয় ও বিধিবদ্ধ সঞ্চিতি। এই সীমাকে নতুন করে নির্ধারণ কিংবা সংজ্ঞা পূনর্বিন্যাসের প্রস্তাব দিয়েছে সিএসই। যাতে সামান্য শেয়ারের দর বাড়লে ওভার এক্সপোজার না হয়ে যায়। সিএসসি পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আর তৃতীয় প্রস্তাব হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-কে আরও শক্তিশালী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যাতে বাজারের সংকটময় মুহুর্তে আইসিবি ভালোভাবে পুঁজিবাজারকে সার্পোট দিতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, আইডিআরএসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট রেগুলেটরি সংস্থাগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে যে কোনো পলিসি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয়ার্ধের মূদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা দরপতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। বাজারের এই পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস বৈঠক করেছে। সেখানে দীর্ঘ মেয়াদে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য এক্সপোজারের বিষয়কে বড় প্রাধান্য দেওয়া হয়

কারণ পুঁজিবাজারে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজারমূল্য হিসাবে ধরা হয়। এতে শেয়ারের দর বেড়ে গেলেই এক্সপোজারের সীমা বেড়ে যায়। তখন প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বিক্রি করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। তাই এক্সপোজারের আওতা থেকে বন্ড, ডিবেঞ্চার, প্রেফারেন্স শেয়ারসহ তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাইরে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এদিকে গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) কমিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করে। ওই নির্দেশনা জারি হওয়ার পর শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়। টানা পাঁচ কার্যদিবসের পতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৩শ’ পয়েন্টের ওপরে পড়ে যায়।

ফলে বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্দেশনা। অবস্থার ভয়াবহতা অনুধাবন করে দফায় দফায় বৈঠকে বসেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে শেয়ারবাজারের নীতি নির্ধারকরা কেউ সরাসারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সমালোচনা করেননি। তারা একাধিকবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে একটি চক্র বাজারে গুজব ছড়িয়েছে। যা বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কগ্রস্ত করে ফেলেছে। তাই এমন দরপতন দেখা দেয়।