student cuncilমুন্নি আক্তার, দেশ প্রতিক্ষণ: সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের তৃতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীরা নিজেদের ভোটের পাল্লা ভারী করতে শিক্ষার্থীদের দারেদারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে নির্বাচনী ইমেজে সরগরম হয়ে উঠেছে। সবার মুখে একটাই কথা কে হবে সাধারন শিক্ষার্থীদের অভিবাবক।

আগে দুটি পদে নির্বাচন হলেও এবার প্রথম ৬টি পদে নির্বাচন অনু্ষ্ঠিত হবে। ৬টি পদের বিপরীতে ২৩ জন প্রার্থী এবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় স্থান পেয়েছেন। পদগুলো হলোঃ সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, ক্রিয়া সম্পাদক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, প্রচার ও সমাজসেবা সম্পাদক।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ‘কেমন প্রার্থী চান?’ প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

বিবিএ বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী তনুজা চক্রবর্তী বলেন, আমি একজন শিক্ষার্থী হিসাবে এমন একজন প্রার্থীকে চাই যে, ছাএদের পাশে থাকবে। যাকে পাওয়া যাবে ছাএদের কল্যানে সবসময়।

এমবিবিএস ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস আলম রাজু বলেন, আমরা ছাত্রছাত্রীদের সহায়ক একটি ছাত্র সংসদ চাই। যারা ছাত্রছাত্রীদের অধিকার নিয়ে কথা বলবে। ক্যাম্পাসে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ কাজ করবে।

ফার্মেসী বিভাগের ৫ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম মিম জানান, সৎ ও পরিশ্রমী প্রার্থীই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রয়োজন। ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে দূরত্ব থাকবে না, থাকবে না কোন বৈষম্য, নেতৃত্ব পাওয়ার পর যার মনে অহংকার থাকবে না এমন প্রার্থীই প্রয়োজন সকলের। মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী

জান্নাতুল ফেরদৌসি সোমা জানান, আসন্ন ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আমি যাকে ভোট দেব আমার জানতে হবে, সে আমাদের চাহিদাগুলো পূরণের সামর্থ্য রাখে কি না? সঠিক মানুষটিকে বাছাই করতে না পারলে ভুক্তভোগী আমাদেরই হতে হবে। তাই যার মধ্যে দায়িত্বশীলতা, নেতৃত্বগুণ থাকবে আমার মতে তাকেই ভোট দিয়ে আমাদের পাশে থাকার সুযোগটা দেওয়া উচিত।

বিবিএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আইভান বলেন, ছাত্র সংসদ মানেই সাধারন ছাত্রদের সংসদ। আর তাই প্রার্থীদের কাছে আমাদের চাওয়া থাকবে তারা সব সময় সাধারন ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ দেখবে, তাদের পক্ষে কথা বলবে, যেকোন সমস্যায় সাধারন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবে। সাধারন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে তারা সব সময় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে।

ডেন্টালের শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ জানান, আমার মতে গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তাদেরকেই নির্বাচিত করা উচিত যারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কথা বলবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে কোন একাডেমি সমস্যা সমাধানের সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবং বহিরাগত ছাত্রছাত্রীদের যে কোন হ্যারাজমেন্টের ব্যাপারে এক্সট্রিম ব্যাবস্থা নিতে পারবে।

ফিজিওথেরাপি বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত, সাহসী-মেধাবী, বুদ্ধিদীপ্ত প্রার্থী দেখতে চাই, যিনি সততার সাথে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন এবং সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রসমাজের মাঝে সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করবেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সমস্যাগুলির সঠিক সমাধান তুলে ধরবেন।

আইন বিভাগ ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ কৌশিক জানান, বর্তমানে সকল ছাএ সংগঠন গুলো তাদের দলীয় লেজুড়বৃদ্ধিতে ব্যাস্ত সাধারন শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় তারা কোন ভুমিকা রাখছে না। আমরা এমন একজন প্রাথীচাই যে দলমত ও ব্যক্তিগত স্বার্থের উদ্ধে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবে।

ফার্মেসী বিভাগের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আফসারী ঝুমা বলেন, ছাত্র সংসদে প্রথমত আমি যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিব। তাই আশা করবো যারা নির্বাচিত হবেন তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করবেন।

সি.এস.ই বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান জিহাদ জানান, প্রার্থী হিসেবে আমি এমন একজন কে চাই, যে কিনা সর্বদা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে থেকে তাদের সমস্যাগুলা বুঝবে। সে যে কোন পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায় সংগত দাবি দাওয়া আদায়ে সোচ্চার থাকবে।

উল্লেখ্য; প্রতি বছর নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভবপর না হওয়ায় ছাত্র সংসদের মেয়াদকাল ১ বছর থেকে বাড়িয়ে ২ বছর করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।