পুঁজিবাজারকে গতিশীল আরও কার্যকর করতে হবে: ডিসিসিআই
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি করতে হবে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগের অর্থ প্রাপ্তি সহজ করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজারে ‘বিনিয়োগ বন্ড’ ছাড়ারও প্রস্তাব দিয়েছে বৃহস্পতিবার ডিসিসিআই এর সভাপতি আবুল কাসেম খানের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির-এর সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ কালে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এর ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, চেইঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাডভাইজর আল্লাহ মালিক কাজেমি, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. ফয়সাল আহমেদ এবং ব্যাংকিং রিফর্ম এ্যাডভাইজর এ কে সুর চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, বিদ্যমান ঋণের উচ্চহারের ফলে দেশের উদ্যোক্তারা আশানুরূপভাবে নতুন বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছেন না, তাই বিনিয়োগে অর্থপ্রাপ্তির সহজীকরনের লক্ষ্যে পুঁজিবাজারে ‘বিনিয়োগ বন্ড’ ছাড়ার প্রস্তাব করেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি সহায়ক উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান।
দেশের এসএমই খাতের উদোক্তাদের সিঙ্গেল ডিজিটি ঋণ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিতকরতে বাংলাদেশ ব্যাংক-এর পক্ষ হতে আরও মনোযোগী হওয়ার আহবান জানান তিনি।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা; যা ব্যাংক হতে প্রদত্ত ঋণের প্রায় ১০.৬৭% এবং এ বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। খেলাপি ঋণের এ অবস্থার কারণে দেশের ভালো উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি খেলাপি ঋণ কমানো, ঋণ আদায়ে ব্যাংক সমূহে আরো সক্রিয় হওয়া এবং বৃহৎ ঋণ প্রকল্প সমূহে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর)’-এর ধারা বাধ্যতামূলক রাখার প্রস্তাব করেন। তিনি বিদ্যমান “মানি লোন কোর্ট এ্যাক্ট ২০০৩”-এর ধারা সমূহ আরো যুগোপযোগী করার প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বর্তমানে বিদ্যমান অর্থসংকট খুবই সাময়িক এবং স্বল্প সময়ে এ সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি বলেন, বিদেশ হতে অবৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যার ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রবাহের পরিমাণ বেড়েছে।
তিনি বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। অবকাঠামো সহ অন্যান্য খাতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রবাহ নিশ্চিতকরনের জন্য পুঁজিবাজারে বন্ড প্রবর্তনের বিষয়টি একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে।
দেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ কে লাভজনক বৃহৎ প্রকল্প নিয়ে কাজ করার আহবান জানান এবং এক্ষেত্রে অর্থায়নের কোনো সমস্যা হবে না বলে- আশ্বাস দেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যদি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়, তাহলে কর অব্যহাতি সুবিধা সহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করা হবে।
এসময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, এফসিএ, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক ইঞ্জিঃ আকবর হাকিম, হোসেন এ সিকদার, হুমায়ুন রশিদ, কে এম এন মঞ্জুরুল হক, নূহের লতিফ খান, সেলিম আকতার খান, ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী এবং মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির বক্তব্য প্রদান করেন।