information lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। হঠাৎ করে এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে কি কারনে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এ বিনিয়োগকারীদের কৌতুহলের শেষ নেই। তবে নানা কারনে এ খাতের উপর আগ্রহ হারিয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

প্রথমত, আস্থা ও তারল্য সংকটে পুঁজিবাজারে চলছে দরপতন। এই দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে ‘পুঁজি হারানোর’ শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছেন।

এছাড়া কৌশলী প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের বড় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ না করে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী নিয়োগ নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার টালবাহানা।

দ্বিতীয়ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক একটাই ‘শেয়ারের দাম আরো কমবে’, তাই ‘এখন বিনিয়োগ করলেই ক্ষতি হবে’। এসবের ফলে বিক্রেতার তুলনায় কমেছে ক্রেতা, এতে শেয়ারের দামও দিনদিন কমছে। এ কারণে চলতি বছরের শুরু থেকেই থেমে থেমে পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। তবে পুঁজিবাজারের এই দরপতন থামাতে সবশেষ সপ্তাহে সরকার ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ‘লাইফ সার্পোট’ দিয়ে বাজার চাঙ্গা রাখার উদ্যোগ নিয়েছে।

এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি হতে ক্রমাগত বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত ৭ মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখাতের কোম্পানিগুলো থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিনিয়োগ তুলে নিয়েছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, আলোচ্য সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্কস (আইএসএন) থেকে। এ সময়ে কোম্পানিটি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে ১৪.০১ শতাংশ। এরপর ইনটেক লিমিটেডে থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে ১১.২৯ শতাংশ, আমরা টেকনোলজি থেকে ৯.৩৩ শতাংশ এবং আমরা নেটওয়ার্কস থেকে ৯.১৮ শতাংশ।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখে আইএসএনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৮.৬৫ শতাংশ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪.৬৭ শতাংশে। অর্থাৎ ৭ মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ১৪.০১ শতাংশ।

ইনটেক লিমিটেডে ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৯.১২ শতাংশ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৮৩ শতাংশে। অর্থাৎ ৭ মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ১১.২৯ শতাংশ।

আমরা টেকনোলজিতে ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩৯.৭৭ শতাংশ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ৩০,০৪ শতাংশে। অর্থাৎ ৭ মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ৯.৩৩ শতাংশ।

আমরা নেটওয়ার্কসে ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩৩.৭৭ শতাংশ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ২৪.৫৯ শতাংশে। অর্থাৎ ৭ মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ৯.১৮ শতাংশ।

ডেফোডিল কম্পিউটার্সে ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১১.০৬ শতাংশ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ৮.১১ শতাংশে। অর্থাৎ ৭ মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২.৯৮ শতাংশ।

বিডিকমে ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮.২৫ শতাংশ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫.৪৫ শতাংশে। অর্থাৎ ৭ মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২.৮০ শতাংশ।