CSE-Final-Logoমোবারক হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: কৌশলগত বিনিয়োগকারী ইস্যুতে সিএসইর সময় বৃদ্ধি করতে ১ বছর সময় বাড়িয়ে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল বিএসইসির ৬৩৩তম কমিশন সভায় এই সময় বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মো. সাইফুর রহমান সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

সিএসই কর্তৃপক্ষকে আগামি ২০১৯ সালের ৮ মার্চের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে। এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন ২০১৩ এর ১৪ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, কমিশন এই সময় বাড়িয়েছে।

সুত্র মতে, কৌশলগত অংশীদার (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার) চূড়ান্ত করতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) কয়েক দফা সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিএসই অংশীদার চুড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে অংশীদার চূড়ান্ত করতে আরও এক বছর সময় বাড়ানোর জন্য বিএসইসিতে আবেদন করেছে সিএসই।

জানা গেছে, গত ১ মার্চ সিএসইর বোর্ড সভায় কৌশলগত অংশীদার চূড়ান্ত করতে এক বছর সময় বাড়াতে আবেদন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর গত মঙ্গলবার সিএসইর পক্ষ থেকে বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, যোগ্য কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণে সিএসই কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৪৬টি স্টক এক্সচেঞ্জে ও ৪২টি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ডি-মিউচুয়ালাইজেশন (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক্করণ) আইনানুযায়ী কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে এ কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি বলে আবার সময় বাড়াতে কমিশনে একাধিকবার আবেদন করে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। এ প্রেক্ষাপটে কমিশন সর্বশেষ তিন মাস সময় বাড়িয়ে আগামীকাল ৮ মার্চের মধ্যে এ-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্নের নির্দেশনা দেয়।

জানা যায়, গত ডিসেম্বরে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩-এর ১৪(১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে আগামী ৮ মার্চের মধ্যে এ-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারিত করে এ-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দিয়েছিল সংস্থাটি। এ সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করতে না পেরে সময় বাড়ানোর জন্য বিএসইসিতে পুনঃআবেদন করে ডিএসই ও সিএসই। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন আরও তিন মাস সময় বাড়িয়েছে।

স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচুয়ালাইজেশন (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথককরণ) আইনে ২০১৬ সালের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা ছিল। এ সময়ের মধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়। এরপরে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে ছয় মাস সময় বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় বিএসইসি। এ সময়ের মধ্যেও কার্যাদি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়ে আরও সময় বাড়ানোর জন্য ডিএসই ও সিএসই কমিশনে আবেদন করে।

এর পরে পাঁচ মাস আট দিন বাড়িয়ে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে এ-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দেয় বিএসইসি। সর্বশেষ আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে কমিশন। এ সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে কমিশন কঠোর অবস্থানে যাবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিমের শর্ত অনুযায়ী, বøকড হিসেবে থাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৬০ শতাংশ শেয়ার কৌশলগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ (সংরক্ষিত শেয়ার থেকে) কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে এবং বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার আইপিও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করতে হবে। অন্যদিকে ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিক স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বা ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান।