strategic-investorদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: কৌশলগত অংশীদার ইস্যুতে ডিএসইর জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেনি বিএসইসি! চীনের কনসোর্টিয়ামের স্বার্থ রক্ষার্থে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ স্বপ্রণোদিত হয়ে অনেক শর্ত দিয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

যার কারনে কৌশলগত ইস্যুতে বিএসইসি ব্যাখ্যা চাইলেও ডিএসই কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। বরং বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছে। বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটি কর্তৃক ডিএসইর লিখিত জবাব যাছাই-বাছাইয়ে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

চীনের কনসোর্টিয়ামের স্বার্থ রক্ষার্থে শর্তগুলো ডিএসই কর্তৃপক্ষ নিজেই প্রস্তুত করে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির। এক্ষেত্রে ডিএসই ২৫ শতাংশ শেয়ারধারীর স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে স্থানীয় ৭৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারের স্বার্থ বিসর্জন কেনো দিতে চেয়েছে তা জানতে চায় বিএসইসি।

বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির মতে, চীনের কনসোর্টিয়াম ২২ টাকা করে দেবে বলে ডিএসই সর্বোত্র প্রকাশ করেছে। তবে লভ্যাংশ দিলে সমপরিমাণ মূল্য কমে যাবে বলে প্রস্তাবিত ডকুমেন্টে বলা হয়েছে।

এমতাবস্থায় শেয়ারের দাম ২২ টাকা কি করে থাকে তা জানতে চায় বিএসইসি। একইসঙ্গে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডাররা বিষয়টি জানে কিনা তাও জানতে চায়। বিএসইসির চিঠির জবাবে ডিএসই দাবি করেছে, চীনের কনসোর্টিয়ামের সব প্রস্তাব আইনসম্মত। তবে এতোগুলো বিরোধপূর্ণ শর্ত থাকার পরেও কিভাবে আইনসম্মত তা জানতে চায় বিএসইসি।

এদিকে বিএসইসির চিঠির আলোকে ডিএসই কৌশলগত বিনিয়োগকারীর চুক্তি যুক্তরাজ্যের (ইউনাইটেড কিংডম) পরিবর্তে বাংলাদেশের আইনে করবে বলে জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির প্রশ্ন, যুক্তরাজ্যের আইনে চুক্তি করার বিষয়টি বাতিল করতে বলা হয়নি। এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

ডিএসইর পরিচালকদের সংখ্যা পরিবর্তন, ১৫ শতাংশের অধিক যে কোন স্থায়ী সম্পদের বিষয়ে, একক বা যৌথভাবে ১০ কোটি টাকার অধিক ঋণ গ্রহণ, যেকোন ১০ কোটি টাকার উপরে চুক্তি,

একক বা যৌথভাবে ১০ কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর স্বার্থ জড়িত যে কোন ইস্যু, যেকোন ধরনের ইনটেলেকচ্যুয়াল সম্পত্তি অর্জন, চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারী তার ইচ্ছা অনুযায়ি যে কাউকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগদানের প্রস্তাব, সেটেলম্যান্ট গ্যারান্টি ফান্ড কন্টিবিউশন বাদ বা স্থগিত করতে হবে এবং ডিএসইর আইপিও সংক্রান্ত যে কোন ইস্যু যেমন, শেয়ারের মূল্য নির্ধারন, স্পন্সর নির্ধারন, অবলেখক নিয়োগ,

প্রসপেক্টাস অনুমোদন ও ইস্যু মূল্য নির্ধারনের আগে চীনের কনসোর্টিয়াম লিখিত অনুমোদন নেওয়ার শর্ত বাতিল করা হয়েছে বলে বিএসইসিকে ডিএসই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির প্রশ্ন, শর্তগুলো বাতিল করতে বলা হয়নি। এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভায় চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বেছে নেয়া হয়। আর ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদনের জন্য ডিএসইর সেক্রেটারি মো. আসাদুর রহমান বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দেয়।

এর আলোকে একইদিনে ডিএসইর প্রস্তাব যাছাই-বাছাইয়ের জন্য বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদকে আহবায়ক ও নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুল আলমকে সদস্য সচিব করে ৪ সদস্যের কমিটি করে বিএসইসি। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন নির্বাহী পরিচালক ড.এটিএম তারিকুজ্জামান ও নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম।