daviদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। আগেই এই দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে বিচ্ছিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করছিল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বুধবার উত্তাল হয়ে ওঠে সারাদেশ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কোটার দাবিতে ফুঁসে ওঠেন।

এক মাসের মধ্যে কোটা সংস্কারে সরকারের আশ্বাসের পর আন্দোলনকারীদের একটি অংশ কর্মসূচি স্থগিত রাখার ঘোষণা দিলেও ঢাবিসহ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের একাংশ আজ তৃতীয় দিনেও বিক্ষোভ চালিয়ে যান।

দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা, বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আন্দোলনে কার্যত বন্ধ হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীদের দাবি একটাই- কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে আনতে হবে। মেধাবীদের সঠিক মূল্যায়ন এবং কোটার নামে অমেধাবীদের বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অন্যায্য পন্থা বন্ধের দাবিতে অনড় তারা।আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোভ হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে মঙ্গলবার অংশ নিয়েছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সরাসরি রাস্তায় ও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ,

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন।

কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রায় তিনশ আন্দোলনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন। এর আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল নিয়ে রোকেয়া হলের সামনে দিয়ে টিএসসি হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসেন। সরকারের চাওয়া এক মাসের সময় প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে কোটা সংস্কারের ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।

এদিন কোটা সংস্কারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট আহ্বান করে আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি দাবি আাদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক অবরোধ করার ঘোষণাও দিয়েছে তারা।