Multinationalদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৮ বহুজাতিক কোম্পানির আয় ও ডিভিডেন্ডে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছছে। আর আয় ও ডিভিডেন্ড ঊর্ধ্বগতির সুবাধে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরও রেকর্ড মাত্রা অতিক্রম করেছে। কোম্পানিগুলো হলো: বিএটিবিসি, বাটা, গ্লাস্কো, গ্রামীণফোন, লিনডে, ম্যারিকো, রেকিট বেনকিজার ও বার্জার লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত কোম্পানিগুলোর প্রোপাইল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, পুঁজিবাজারে বর্তমানে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানির সংখ্যা ১১টি। এর মধ্যে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, সিঙ্গার বাংলাদেশ ও লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট বাদে বাকি ৮টি কোম্পানিই সমাপ্ত অর্থবছরে ঘোষিত মুনাফা ও লভ্যাংশে রেকর্ড করেছে। এদিকে, রেকর্ড উচ্চতায় আয় ও লভ্যাংশ পৌঁছার সুবাদে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরও রেকর্ড উচ্চতা অতিক্রম করেছে।
উল্লেখ্য, আলোচ্য কোম্পানিগুলো প্রতিবছর শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কেবল নগদ লভ্যাংশই ঘোষণা করছে। এ কারণে কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধনের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না।

বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি লিমিটেড (বিএটিবিসি): সমাপ্ত অর্থবছরে বিএটিবিসি শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১৩০.৫০ টাকা এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৬০০ শতাংশ। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর এটি কোম্পানিটির সর্বোচ্চ আয়। তবে লভ্যাংশের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এর আগে ২০১৩ সালে কোম্পানিটি ৬২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আগের অর্থবছরে (২০১৬ সালে) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১২৬.৩৭ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৬০০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে লভ্যাংশ সমপরিমাণ থাকলেও আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩.২৬ শতাংশ।

বাটা সু কোম্পানি লিমিটেড: সমাপ্ত ২০১৭ অর্থবছরে বাটা সু শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৮২.৩৪ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৩৩৫ শতাংশ। এটি কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ আয় ও লভ্যাংশ। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৭৬.২৪ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৩৩০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ১.৫১ শতাংশ।

বার্জার পেইন্টস লিমিটেড: সমাপ্ত ২০১৭ অর্থবছরে বার্জার শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১০৯ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৬০০ শতাংশ। এটি কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর রেকর্ড সর্বোচ্চ আয় ও রেকর্ড সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৬৪.৩৭ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৩৭০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ৬৯.৩৩ শতাংশ ও ৬২.১৬ শতাংশ।

গøাক্সো বাংলাদেশ লিমিটেড: সমাপ্ত ২০১৭ অর্থবছরে গ্যাক্সো শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৫৫.৫৬ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৫৫০ শতাংশ। এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটির তৃতীয় সর্বোচ্চ আয় এবং সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল যথাক্রমে ৬৮.৬৩ টাকা এবং ৬৮.৯৯ টাকা। এদিকে, ২০১৫ সালেও কোম্পানিটি ৫৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫৩.৫১ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৫০০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ৩.৮৩ শতাংশ ও ১০ শতাংশ।

গ্রামীণফোন লিমিটেড: সমাপ্ত ২০১৭ অর্থবছরে গ্রামীণফোন শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ২০.৩১ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৫৫০ শতাংশ। এটি কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ আয় ও সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। আগের বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় করেছিল ১৬.৬৮ টাকা এবং লভ্যাংশ দিয়েছিল ৫০০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ২১.৭৬ শতাংশ ও ১০ শতাংশ।

লিনডে বাংলাদেশ লিমিটেড: সমাপ্ত ২০১৭ অর্থবছরে লিনডে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৬২.৬০ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৩৪০ শতাংশ। এটি কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ আয় ও সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫৭.৯০ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৩১০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ৮.১১ শতাংশ ও ১০ শতাংশ।

ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড: সমাপ্ত অর্থবছরে ম্যারিকো শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৫২.১৫ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৬০০ শতাংশ। এটি কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ আয়। তবে লভ্যাংশের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৪ সালে কোম্পানিটি ৯০০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪৫.৭২ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৫০০ শতাংশ। সমাপ্ত অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ১৪.০৬ শতাংশ ও ২০ শতাংশ।

রেকিট বেনকিজার: কোম্পানিটি সমাপ্ত ২০১৭ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৮০.৬৩ টাকা এবং লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৭৯০ শতাংশ। এটি কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ আয় ও সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৬২.৬৬ টাকা এবং লভ্যাংশ ছিল ৭৭৫ শতাংশ। ওই বছরের আয় ও লভ্যাংশ ছিল এর আগে সর্বোচ্চ। বিদায়ী অর্থবছরে আয় ও লভ্যাংশে প্রবৃদ্ধি এসেছে যথাক্রমে ২৮.৬৭ শতাংশ ও ১.৯৩ শতাংশ।