cement lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গত কয়েক মাসে লাগামহীনভাবে বেড়েছে নির্মাণসামগ্রীর অন্যতম উপকরণ সিমেন্টের দর। বস্তাপ্রতি সিমেন্টের দর বেড়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। সিমেন্টের দর লাগামহীভাবে বাড়লেও মুনাফায় রয়েছে নিম্নমুখী অবস্থা। সিমেন্টশিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম ঊর্ধ্বমুখী, বেড়েছে ডলারের দামও। এসব কারণেই সিমেন্টের দর বেড়েছে। যে হারে কাঁচামালের দর বেড়েছে, সে হারে বাড়েনি সিমেন্টের দর। ফলে মুনাফায় নিম্নমুখী অবস্থানে রয়েছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের ৭টি কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে শুধু মেঘনা সিমেন্ট ছাড়া ৬টি কোম্পানির আয় কমেছে। সূত্র মতে, জুলাই ১৭ থেকে মার্চ ১৮ পর্যন্ত সময়ে মেঘনা সিমেন্টের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ৫৭ পয়সা। এ হিসেবে ইপিএস বেড়েছে ১২৩ শতাংশ।

আয় বাড়ার বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও মেঘনা সিমেন্টের কোম্পানি সচিব নাসিমুল হাই বলেন, আমরা বসুন্ধরা সিমেন্টের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছি। এর মাধ্যমে সরকারের বড়ো বড়ো কয়েকটি প্রকল্পে সিমেন্ট সরবরাহ করছি। ফলে আমাদের আয় গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।

ব্যবসা বাড়ানোর জন্য বিক্রয়কর্মীদের যে টার্গেট দেওয়া ছিলো, সেটি তারা পূরণ করার ফলে এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। অন্যদিকে গত বছর কনফিডেন্স সিমেন্টের ইপিএস ছিলো ৭ টাকা ৭১ পয়সা। এ বছর নয় মাসে হয়েছে ৫ টাকা ৯ পয়সা। এ হিসাবে ইপিএস কমেছে ৩৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে কোম্পানির সচিব দেলোয়ার হোসেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, কাঁচামালের দর যেভাবে বেড়েছে, আমাদের সিমেন্টের দর সেভাবে বাড়েনি। ফলে আয় আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। গত বছরের তুলনায় হাইডেল বার্গ সিমেন্টের ইপিএস কমেছে ১৫ শতাংশ।

১৮-এর মার্চ মাস শেষে নয় মাসে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৫ টাকা ৩৪ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ৬ টাকা ৩১ পয়সা। এছাড়া গত বছর লাফার্জ হোলিসম সিমেন্টের ইপিএস ছিলো ২৭ পয়সা। এ বছর নয় মাসে হয়েছে ২ পয়সা। এ হিসেবে ইপিএস কমেছে ২৬ শতাংশ।

গত বছরের তুলনায় এ বছর এমআই সিমেন্টের ইপিএস কমেছে ৬৮ শতাংশ। সর্বশেষ নয় মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১৫ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে এটি ছিলো ৩ টাকা ৫৭ পয়সা। এদিকে এ বছর সর্বশেষ নয় মাসে প্রিমিয়ার সিমেন্টের ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৫৬ পয়সা, গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ৩ টাকা ৯৩ পয়সা। এ হিসেবে এ বছর ইপিএস কমেছে ৩৫ শতাংশ।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সচিব শফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কাঁচামালের দর বাড়ার কারণে আমাদের আয় কমেছে। তবে যে হারে সিমেন্টের দর বাড়ানো হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে কাঁচামালের দর। এছাড়া সিমেন্টের দর তুলনামূলকভাবে একটু পরে বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অ্যারামিট সিমেন্টে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ১৪০ শতাংশ। এ বছর কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫৮, গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ৩ টাকা ৭৯ পয়সা।