dse dorpotonদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তরিকতা না থাকায় লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর ভাগ্য বিড়ম্বিত হচ্ছে। দিনের পর দিন লোকসান দিচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। ঘটছে টানা দরপতন। দিন যত যাচ্ছে পতনের মাত্রা ততো বাড়ছে। এ যেন লাল ঘোড়ায় সওয়ার হওয়ার মতো। কিছুতেই যেন দিক খুঁজে পাচ্ছে না শেয়ারবাজার। লাগামহীনভাবে ক্রমাগত পতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা ১২ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো দেশের শেয়ারবাজার। সাম্প্রতিক সময়ে এত দীর্ঘ দরপতন আর হয়নি দেশের শেয়ারবাজারে।

এদিকে টানা দরপতন দেখা দিলেও আগামী ৭ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব দেয়ার পর শেয়ারবাজারের উন্নয়নে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, শেয়ারবাজার দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের উৎস হওয়া উচিত। আমাদের একটি ভালো শেয়ারবাজার স্থাপন করতে হবে, যা দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের উৎস হবে।

অর্থমন্ত্রী এমন আশ্বাস দিলেও টানা দরপতনকে অস্বাভাবিক উল্লেখ করে এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান। তিনি বলেন, এখন যে দরপতন হচ্ছে তা অস্বাভাবিক। এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। শেয়ারবাজারকে ভালো করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ শেয়ারবাজারের বিপক্ষে।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে শেয়ারবাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। বরং তারা যতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছে সবই শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পরিপন্থী। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন ভূমিকার কারণেই এখন বাজারে অস্বাভাবিক টানা দরপতন দেখা দিয়েছে।

টানা দরপতনের কারণে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ভর করেছে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, কি কারণে এমন টানা দরপতন হচ্ছে এটা বলা মুশকিল। তবে এমন টানা দরপতন ঠিক না। এই দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা কমতে শুরু করেছে। যেহেতু প্রতিনিয়ত বাজার পড়েই যাচ্ছে সুতরাং বাজারে আস্থার একটা অভাব সৃষ্টি হয়েছে।

ব্যাংকের তারল্য বাড়াতে সরকারের দেয়া বিশেষ সুবিধা ও ডিএসইর কৌশলগত বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে যে সুবিধা দেয়া হয়েছে তার ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারে পড়ছে না।

এর কারণ হলো ব্যাংকের বিনিয়োগ অন্য খাতে যাচেছ। শেয়ারবাজারে ব্যাংক বিনিয়োগ বাড়ায়নি। আর কৌশলগত বিনিয়োগকারীর বিষয়টি হলো দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। বাজারে এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।