Tallu-Spiningজ্যৈষ্ঠ প্রতিনিধি , দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বঙ্গজ-তাল্লু গ্রুপের তাল্লু স্পিনিং মিলস লিমিটেডের কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা। ঋণের কিস্তির সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় খেলাপি হয়ে পড়েছে কোম্পানিটি। তাই টাকা উদ্ধারে বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রির জন্য নিলামে ডেকেছিল ব্যাংক। সম্পত্তি বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছে কোম্পানিটি।

সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ মে নিলামের জন্য নির্ধারিত দিন ছিল। এর আগেই গত ১৫ মে উচ্চ আদালতে গিয়ে নিলামের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছে তাল্লু স্পিনিং কর্তৃপক্ষ। ফলে আপাতত সম্পত্তি নিলাম স্থগিত রাখতে হচ্ছে বিডিবিএলকে।
ব্যাংকের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে কোম্পানিটির কাছে বিডিবিএলের পাওনা ৬৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর বিপরীতে নিয়মিত কিস্তি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারেনি তাল্লু স্পিনিং মিলস কর্তৃপক্ষ।

ফলে অনাদায়ী ঋণ ২০১৭ সালে খেলাপিতে পরিণত হয়। এক বছর অপেক্ষার পরে সম্পত্তি নিলামে তোলে ব্যাংক। নিলামে তোলা সম্পত্তির মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ও ময়মনসিংহের কারখানার এক হাজার ৭৯৭ শতক জমি রয়েছে। আগামী ২৪ মে বিকাল ৩টার মধ্যে দরপত্র জমাদানের শেষ তারিখ নির্ধারণ করেছিল বিডিবিএল।

সম্পত্তি নিলামে তোলার পর থেকেই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের সঙ্গে কোনোভাবে মিটমাট করা যায় কিনা, এজন্য একাধিক বৈঠক ও বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করে। কিন্তু আইন অনুযায়ী ব্যাংকের ক্ষমতা সীমিত থাকায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় তাল্লু স্পিনিং মিল।

বিষয়টি নিয়ে তাল্লু স্পিনিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পণ্য বিক্রি করে উৎপাদন খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য ব্যাংকের নির্ধারণ করে দেওয়া কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছি না। সম্পত্তির নিলাম বন্ধ করতে তাই আমরা হাইকোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছি। কিস্তির টাকার পরিমাণ পুনর্নির্ধারণ করা হলে ঋণের বাকি অর্থ পরিশোধ করতে পারবেনা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে লোকসানে থাকা তাল্লু স্পিনিং বিনিয়োগকারীদের কোনো মুনাফা বা ডিভিডেন্ড দেয়নি। এতে কোম্পানিটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে কোম্পানিটি ১০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।

বস্ত্র খাতের কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৮৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট আট কোটি ৯৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭৫টি শেয়ারের মধ্যে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ২৯ দশমিক শূন্য চার শতাংশ,

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৭ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিটির গত তিন মাসের শেয়ার হাতবদলের চিত্রে দেখা যায়, গত ফেব্রæয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ১২ টাকা ও গতকাল সাত টাকা ৬০ পয়সায় শেয়ার হাতবদল হয়েছে।