insurance lagoমোবারক হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফা সামান্য বেড়েছে। এ খাতের ৩৪ কোম্পানি গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে নিট ৯১ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা মাত্র ৫১ লাখ টাকা বা শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। তালিকাভুক্ত ৩৪ কোম্পানি প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য মিলেছে।

পুঁজিবাজারে সাধারণ বীমা খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৩৫। এর মধ্যে শুধু জনতা ইন্স্যুরেন্স আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। বাকিগুলোর প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২৪ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১০টির। তবে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা বাড়লেও বোনাস শেয়ার ইস্যুর কারণে ইপিএস কমেছে।

খুব বেশি মুনাফা না করলেও কয়েকটি ছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো বড় লোকসানে পড়েনি। অবশ্য এর সুনির্দিষ্ট কারণও স্পষ্ট নয়। কয়েকটি বীমা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়ার কারণে অধিকাংশ কোম্পানি ভালো মুনাফা করতে পারেনি।

কোম্পানিগুলোর মুনাফার তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নিট মুনাফা বা ইপিএসে প্রবৃদ্ধির দিক এগিয়ে ছিল এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে নিট মুনাফা গত বছরের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৯১ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এতে ইপিএসও ২৯ পয়সা থেকে বেড়ে ৪৫ পয়সা হয়েছে।

প্রবৃদ্ধির ধারায় এরপরের অবস্থানে থাকা প্রগতি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ২৭ শতাংশ বেড়ে ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ও ইপিএস ২১ শতাংশ বেড়ে ৭৪ পয়সা হয়েছে। ইসলামিক ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ৩২ শতাংশ বেড়ে এক কোটি ৪৩ লাখ টাকা ও ইপিএস ২০ শতাংশ বেড়ে ৪২ পয়সা হয়েছে।

মুনাফা ও ইপিএসে প্রবৃদ্ধির হার কম বা বেশি হওয়ার কারণ নতুন শেয়ার ইস্যু। এ ছাড়া পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ও ইপিএস সাড়ে ১৮ শতাংশ বেড়ে যথাক্রমে ৬ কোটি ২ লাখ টাকা ও এক টাকা ০২ পয়সা হয়েছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ও ইপিএস প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়ে যথাক্রমে এক কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও ৫১ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। ৯ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস এক টাকা ৭ পয়সা,

ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৪০ পয়সায়, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ১১ পয়সা, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস ৪৮ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। আরও যেসব ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস বেড়েছে সেগুলো হলো- অগ্রণী, সোনারবাংলা, ইস্টল্যান্ড, রিপাবলিক, প্রভাতি, পিপলস, নিটল, মার্কেন্টাইল, কর্ণফূলী, নর্দার্ন, কন্টিনেন্টাল, রূপালী, সেন্ট্রাল, ইস্টার্ন ও বাংলাদেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স। এসব কোম্পানির ইপিএস ১ থেকে ৪ শতাংশ বেড়েছে।

বিপরীতে মুনাফায় থাকলেও গত বছরের তুলনায় সর্বাধিক ইপিএস কমেছে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি নিট এক কোটি ৫৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছে, যা গত বছর ছিল ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুুলনায় নিট মুনাফা অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে।

এতে ইপিএস ৭৩ পয়সা থেকে ৩২ পয়সায় নেমেছে। একই অবস্থা ছিল প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল তিন কোটি ১১ লাখ টাকা। এ বছর তা এক কোটি ৪৩ লাখ টাকায় নেমেছে। এতে ইপিএস ৭৬ পয়সা থেকে কমে ৩৫ পয়সায় নেমেছে।

মুনাফা ও ইপিএস কমেছে প্রায় ৫৪ শতাংশ। ৩৯ শতাংশ কমে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের নিট মুনাফা এক কোটি ১৮ লাখ টাকা ও ইপিএস ৩০ পয়সায় নেমেছে। সাড়ে ৩৭ শতাংশ কমে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ও ইপিএস ৪৫ পয়সায়, ২৫ শতাংশ কমে তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ও ইপিএস ৩২ পয়সায় নেমেছে।

এ ছাড়া ফিনিক্স, প্যারামাউন্ট, এশিয়া, গেøাবাল ও গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ইপিএস দেড় থেকে ১৮ শতাংশ কমে যথাক্রমে ৬০ পয়সায়, ১৭ পয়সায়, ৫৬ পয়সায়, ৪১ পয়সায় ও ৭২ পয়সায় নেমেছে।