eastern lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশলী খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন কেবলসের সাথে বিআরবি কেবলসের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। ইস্টার্ন কেবলসের পরিচালনা পর্ষদ ব্যবসায়িক কৌশল ও পরিকল্পনা চুরির ভয়ে শঙ্কিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি বিআরবি কেবলস থেকে কেউ পরিচালক হিসেবে পরিচালনা পর্ষদে আসলে সেই শঙ্কা আরও বাড়বে বলে মনে করছে কোম্পানিটি।

এই জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে দ্বিতীয়বারের মতো আইনি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, বিআরবি কেবলস পুঁজিবাজার থেকে ২ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনে ইতোমধ্যে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তবে বিআরবি কেবলস থেকে কেউ যাতে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক না হতে পারে সেই জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির দারস্থ হয়েছে ইস্টার্ন কেবলস।

কোম্পানিটি মনে করে, বিআরবি কেবলসের কোনো পরিচালক যদি ইস্টার্ন কেবলস কোম্পানির পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়; তাহলে ইস্টার্ন কেবলসের ব্যবসায়িক কৌশল এবং পরিকল্পনা চুরি হয়ে যাবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।

কোম্পানির ৩১তম এজিএমে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্য থেকে পরিচালক নির্বাচন করা কালে গণ্ডগোল এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই অনিবার্য কারণে এজিএম স্থগিত করা হয়। এতে লিস্টিং রেগুলেশন মেনে না চলায় কোম্পানিটি এখন জেড ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটি আরও মনে করছে, এমন ঘটনা ঘটলে প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদন, উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণসহ সার্বিক কাজকর্মে বিরুপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।

তাই যাতে বিআরবি কেবলসের কেউই এখানে পরিচালক পদে না আসতে পারে সেই জন্য বিধি নিষেধ আরোপের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে ফের অনুরোধ জানানো হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে।

তবে বিষয়টি নিয়ে ইস্টার্ন কেবলসের কোম্পানি সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে এড়িয়ে যান।

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্র বলছে, প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয়বারের মতো এই বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির কাছে চিঠি দিয়েছে। বিএসইসি মনে করে ইস্টার্ন কেবলস একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই বিআরবি কেবলসের প্রতিনিধিকে ইস্টার্ন কেবলসের পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টিও সরকারের। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিধি নিষেধ জারি করাও সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

সরকার এ নিয়ে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ সাধারণ সভার (ইজিএম) মাধ্যমে অনুমোদন করাতে হবে। এরপর তাদের সংঘস্মারক ও সংঘবিধি সংশোধন পূর্বক বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। ইস্টার্ন কেবলস সরকারি কোম্পানি হিসেবে ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এ ক্যাটাগরির কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় রয়েছে সরকার। বাকি অংশের মধ্যে দশমিক ০১ শতাংশ পরিচালকদের হাতে।

এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার। ৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ১ টাকা ১৯ পয়সা। আর এসময় কোম্পানির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য হয়েছে ৩০ টাকা ৬১ পয়সা।