BSEC-news-specialদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মূলধন উত্তোলনের পর সংশ্লিষ্ট কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে এর পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার তিন বছর পর্যন্ত ধারণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট নির্দেশনায় এর আগে শুধু কোম্পানির উদ্যোক্তা ও প্রবর্তক শেয়ারহোল্ডারদের সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা ছিল। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়।

সভাশেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১১ সালের ২ অক্টোবর জারি করা কমিশনের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, আইপিওতে আসার পর কোম্পানির উদ্যোক্তা ও প্রবর্তক শেয়ারহোল্ডারদের কোম্পানির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার কমিশনের কাছ থেকে সম্মতি পাওয়ার তারিখ থেকে তিন বছর পর্যন্ত ধারণ করতে হবে। এটিকে কিছুটা সংশোধন করে কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পরিচালকদেরও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে এর পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা আগে থেকেই রয়েছে। এর বাইরে যেসব কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসতে চায়, তাদের ক্ষেত্রে শুধু কোম্পানির উদ্যোক্তা ও প্রবর্তক শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষেত্রে এর পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনা রয়েছে।

এক্ষেত্রে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও প্রবর্তক শেয়ারহোল্ডারদের মূলধন উত্তোলনে কমিশনের কাছ থেকে সম্মতি পাওয়ার তিন বছর পর্যন্ত ন্যূনতম শেয়ার ধারণ করতে হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোম্পানির পর্ষদে উদ্যোক্তা ও প্রবর্তক শেয়ারহোল্ডারদের বাইরেও শেয়ারধারী পরিচালক রয়েছে। এক্ষেত্রে কমিশনের আগের নির্দেশনায় পরিচালকদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না থাকায় তাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা থেকে যায়।

পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায়। এজন্য বিদ্যমান নির্দেশনা কিছুটা সংশোধন করে আইপিওর মাধ্যমে মূলধন উত্তোলনে আগ্রহী কোম্পানির ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতার তালিকায় তাদের উদ্যোক্তা ও প্রবর্তক শেয়ারহোল্ডারদের পাশাপাশি পরিচালকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে এর আগের নির্দেশনা নিয়ে অস্পষ্টতাও দূর হয়েছে।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে আরো অনেক আগে থেকেই তত্পর রয়েছে কমিশন। ন্যূনতম শেয়ার ধারণে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই চলেছে দীর্ঘদিন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমিশনের পক্ষে রায় আসায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।

তবে এখনো বেশকিছু কোম্পানি ন্যূনতম শেয়ার ধারণ-সংক্রান্ত বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালন করছে না। যেসব কোম্পানি এ নির্দেশনা মানছে না, তাদের রাইট কিংবা প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের অনুমোদনও দেয়া হচ্ছে না।

ফলে নিজেদের প্রয়োজনে শেষ পর্যন্ত কমিশনের নির্দেশনা মেনে ন্যূনতম শেয়ার ধারণ করতে বাধ্য হবে তারা। তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে চায়, তাদেরও ন্যূনতম শেয়ার ধারণের আওতায় আনার বিষয়টি ইতিবাচক।