bse lagoদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) বহরে নতুন ৬টি জাহাজ যুক্ত হচ্ছে। আগামী মাসে একটি এবং পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে আরও চারটি মাদার ভ্যাসেল বিএসসির পতাকা উড়াবে। অপর জাহাজটি যুক্ত হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চীন থেকে এই ছয়টি জাহাজ কেনা হচ্ছে। জাহাজগুলো বহরে যুক্ত হলে বিএসসির বিদ্যমান নাজুক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

বিএসসির একজন কর্মকর্তা বলেন, জাহাজগুলো পৌঁছলে বিএসসির পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমাদের আয়ও বাড়বে। বন্ধ হয়ে যাওয়া বিভিন্ন রুটগুলো আবারো আমরা চালু করতে পারবো। জ্বালানি তেল পরিবহনে বড় ধরনের উন্নতি আসবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিনের পুরানো জাহাজগুলো স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করে দেয়ায় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের অবস্থা খুবই নাজুক। মাত্র এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বিএসসি বহরের ১৩টি জাহাজের মধ্যে ১০টি বিক্রি করে দেয়। এর বিপরীতে কোন জাহাজ বিএসসির বহরে যুক্ত হয়নি। বিএসসি এর আগে পুরাতন জাহাজ কেনার একটি উদ্যোগ নিলেও তা সফল হয়নি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, বিএসসির সক্ষমতার বিশ শতাংশও ব্যবহৃত হচ্ছে না। কর্মকর্তা কর্মচারী এবং নাবিকদের একটি বড় অংশকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে। অনেকেই চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। কাজ না থাকায় সংস্থাটি দিনে দিনে আরো বেশি ক্ষতির কবলে পড়ছে।

বিদ্যমান পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে সংস্থার বহরে নতুন ২১টি জাহাজ অন্তর্ভুক্ত করার একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে প্রথম দফায় চীন সরকারের ঋণ সহায়তায় ৬টি জাহাজ কেনা হচ্ছে। এই ছয়টি জাহাজের মধ্যে তিনটি অয়েল ট্যাংকার এবং তিনটি বাল্ক কার্গো ভ্যাসেল।

জাহাজগুলোর মোট মূল্য ১ হাজার চারশত আটচল্লিশ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে বিএসসির বহরে থাকা জাহাজগুলোর ধারণক্ষমতা ১২/১৩ হাজার টন হলেও নতুন যুক্ত হতে যাওয়া ছয়টি জাহাজের প্রতিটির ধারণক্ষমতা ৩৯ হাজার টন। অর্থাৎ ছয়টি জাহাজ হলেও এগুলো আগেকার ১৮টি জাহাজের সমান পণ্য পরিবহন করতে পারবে।

বিএসসির শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেছেন, চীনের বিভিন্ন শিপ ইয়ার্ডে জাহাজগুলো তৈরি হচ্ছে। বিএসসির শীর্ষ কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে জাহাজগুলো পরিদর্শন করেও এসেছেন। আগামী মাসের মধ্যেই একটি বাল্ক কেরিয়ার বিএসসির বহরে যুক্ত হবে। পরের মাসে আসবে অপর একটি বাল্ক কেরিয়ার। আগামী নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে পৃথক পৃথক চালানে তিনটি নয়া অয়েল ট্যাংকার চট্টগ্রাম পৌঁছবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই প্রক্রিয়ার শেষ বাল্ক কেরিয়ারটি বহরে যুক্ত হবে।