sadiq-575x323জয়নাল আবেদিন ও মহসিন সুজন, বরিশাল, দেশ প্রতিক্ষণ: বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ শুধু একজন নেতা নয়, তিনি সত্যিকার অর্থে একজন চেইঞ্জ মেকার। একটি দেশের সার্বিক ও সুষম উন্নয়ন তখনই ঘটে যখন দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলের উন্নয়নে উদ্ভাবনী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়।

স্থানীয় সরকারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি কর্পোরেশন সেই কাজ সঠিকভাবে করতে সক্ষম হবে বলে আমরা মনে করি। আসছে আগামী ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের আ’লীগের মনোনীত মেয়র প্রাথী সাদিক আবদুল্লাহ ‘‘আমরাই গরবো আগামীর বরিশাল”  স্লোগানে বরিশালবাসীর হৃদয়ে স্বপ্নের জাল বুনে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। সাদিক আবদুল্লাহ অন্য সকল সিটির মেয়র প্রার্থীদের থেকে একটু ব্যাপক পরিসরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।

নগরভবন ঠিকানা না হলেও বর্তমানে মহানগরীর মানুষ এখন তাকে ‘মেয়র’ বলেই সম্বোধন করে। সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে ছুটে যায় তার কাছে। সাদিকও নিরাশ করেন না বিপদে পড়া তার প্রিয় নগরবাসীকে। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে মরহুম শওকত হোসেন হিরনের পরাজয়কে সাদিক আব্দুল্লাহ একটি অভিজ্ঞতা হিসেবেই নিয়েছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর এখন সকাল-সন্ধ্যা কাটে সাধারণ মানুষকে নিয়ে।

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাসার নিচতলার ড্রইংরুমে দেখতে পান অপেক্ষমাণ মানুষের জটলা। কেউ এসেছেন সমস্যা নিয়ে, আবার কেউ বিচারপ্রার্থী হতে। সাদিক সবার কথা শোনেন, সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন কিছুতেই বাদ পড়ছেন না সাদিকের। তাকে ছাড়া যেন নগরবাসীর কোনো অনুষ্ঠানই পূর্ণতা পায় না। সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড শেষে মধ্যরাতে যখন সাদিক ফেরেন তখনো মানুষের আনাগোনা থাকে নগরীর কালীবাড়িস্থ বাসায়।

সাদিক মনে করেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার দাদা, বাবা সবাই বরিশালের মাটিতে রাজনীতি করেছে। আমিও তাদের বাইরে নই। আমি কোন কুট রাজনীতি বুঝি না। ওই রাজনীতি করতেও চাই না। দেশ ও বরিশালের উন্নয়নের জন্য কোন কাজই আমি ভয় পাই না। আমি জনগনের মাঝেই থাকতে চাই। জনগনের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়েই রাজনীতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের ভালোবাসাকে জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মেনে নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই বড় সিটির মানুষের কল্যাণে, দলের কল্যাণে।

সাদিক আবদুল্লাহ’র বাবা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী রাজনীতির কর্ণধার। শুধু আওয়ামী লীগের কর্ণধার বললে কিছুটা ভুল হবে। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক। সকল দলের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা ভরে দেখেন তাকে। তার বাবা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ছিলেন গরীব মেহনতি মানুষের নেতা।

তবে এ শহীদ নেতা ‘নেতার’ মতো আচরন করেন নি কখনো। খেটে খাওয়া মানুষের প্রাণের বন্ধু ছিলেন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। তারই সুযোগ্য পুত্র আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। যার হাত ধরে-ই বিশৃঙ্খল বরিশালে ফিরেছে শৃঙ্খলা, বিরাজ করছে শান্তি। দক্ষিণাঞ্চলের এই রাজনৈতিক অভিভাবকের উত্তরসূরী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। খুব স্বল্প সময়ে সকল বয়সী মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন এই তরুন নেতা।

সাদেক আব্দুল্লাহ’র মাঝেই নগর পিতার নেতৃত্ব খুঁজে পাচ্ছেন প্রবীণ নেতারা। তৃর্নমুল নেতাকর্মীদের মতে, ‘সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ মাঝেই দেখা যায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের প্রতিচ্ছবি, আর যার শরীরে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতার রক্ত তার চেয়ে কে ভালবাসতে পারবে আ’লীগকে। যা আরো একবার প্রমান হলো বরিশালে শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে।
তরুন এ নেতার প্রশংসার পঞ্চমুখ ছিলেন বরিশাল জেলা ও মহানগর আ’লীগের সিনিয়র নেতারাও।

কারন তার অক্লান্ত পরিশ্রমে বরিশাল নগরী পরিণত হয়েছে আনন্দের নগরী। বরিশাল মহানগর আ’লীগ নেতা সাদিক আব্দুল্লাহর সুষ্ঠু নেতৃত্বে সুন্দর ও শান্তি ফিরেছে বরিশালে। তার ডাকে বরিশাল মহানগরের ও ওয়ার্ড আ’লীগ এবং ১০ উপজেলাসহ সকল নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে ওঠে। প্রতিটি এলাকায় তার নেতৃত্ব ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু বরিশাল নয় বরিশালের অজপাড়া গায় একটি নাম উচ্চারিত হচ্ছে তা হলে সাদিক আবদুল্লাহ।

তাই বরিশাল সিটির নগরপিতা হিসেবে সাদিককে মনে করে তৃনমূল। এদিকে নেতা-কর্মীদের কোন মানুষের বিপদের কথা শুনলেই ছুটে যান সেখানে তিনি। সব মিলিয়ে এই তরুন নেতা কর্মীদের মন জয় করে নিয়েছেন। যার ফলে তরুন নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ যেভাবে মানুষের মতে জায়গা করে নিচ্ছেন তাতে বলাই যায়, বরিশালের আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আকাশে উজ্জল নক্ষত্র তিনি।

আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রর্তীক বরাদ্দের পর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছে প্রার্থীরা। আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা শুরুর পর থেকেই ধারাবাহিক সকাল থেকেই গনসংযোগে নেমে পড়েন আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সহ ছয় দলের মেয়র প্রার্থীরা। থেমে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।

ভোটারদের ঘুম ভাঙার আগে তাদের দরজায় কড়া নাড়ছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা। ভোটারদের হাতে প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সম্বলিত লিফলেট তুলে দিয়ে নিজ নিজ নির্বাচনী প্রতীকে ভোট ও প্রার্থীদের জন্য দোয়া চাইছেন তারা। পাশাপাশি মাইকিং এর শব্দে নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে ভোটারদের মাঝে। আওয়ামী লীগ সহ ৫টি দলের প্রার্থীরা উন্নয়নের শ্লোগান দিয়ে ভোট চাইলেও ব্যতিক্রম প্রচারনা চালাচ্ছে বিএনপি। উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরা।

সূত্রমতে ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটের লড়াইকে সামনে রেখে ১০ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনা। ওইদিন বেলা ১২টার পরে মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ায় প্রচার প্রচারণা শুরু করতে সময় বিলম্বিত হয় প্রার্থীদের।

বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রার্থী বেলা ১২টার পর পরই আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনা শুরু করলেও সন্ধ্যার পরে আনুষ্ঠানিক প্রচারনা শুরু হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর। এর বাইরে বামপন্থি রাজনৈতিক সংগঠন বাসদ ও সিপিবি’র মেয়র প্রার্থী’র আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনা শুরু হয়েছে গত বুধবার সকাল থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, অনেক আগে থেকেই প্রচার প্রচারনায় এগিয়ে আছে ক্ষমতাসিন আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক প্রচারনা শুরু করা সাদিক আবদুল্লাহ প্রচারনার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ গত বুধবার সকাল সকালই প্রচারনায় নেমে পড়েন। ‘আমরাই গরবো আগামীর বরিশাল’ এই শ্লোগান নিয়ে প্রত্যন্ত এলাকার ভোটারদের কাছে ছুটে যান মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ ও তার নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা। তারা পোষ্টার, লিফলেট ও স্টিকার নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যান।

ভোটের আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভোটারদের কাছে পৌছে দেন সাদিক আবদুল্লার ছবি ও নৌকা প্রতীক সম্বলিত ভোট কেন্দ্রের পরিচিতিপত্র। সাদিক আবদুল্লাহ সহ তার নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সম্পর্কে অবহিত করেন ভোটারদের। উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে সাদিক আবদুল্লাহ’র বিকল্প নেই জানিয়ে নৌকায় ভোট দাবী করেন সংশ্লিষ্টরা।

তাছাড়া নৌকার পক্ষে দিনভর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণসংযোগ ছাড়াও কর্মী সভা করেছেন আওয়ামী লীগের দলীয় নেতারা। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৩০, ১১ ও ১৬ নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী উঠান বৈঠক করেছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনটি উঠান বৈঠকেই ভোটার ও সমর্থকদের বেশ সাড়া পড়ে। ভোটাদের প্রতি আহবান জানিয়ে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী।

মরহুম শওকত হোসেন হিরন যখন মেয়র ছিলেন তখন বরিশাল সিটিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কারন তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের মেয়র। কিন্তু গত পাঁচ বছরে কি উন্নয়ন হয়েছে তার প্রমান নগরবাসি। তাই শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ৩০ জুলাই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চান সাদিক আবদুল্লাহ।

নগরীর মল্লিক রোডে গনসংযোগ কালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, নগরীতে বেকারত্ব নিরসনের জন্য আমি কাজ করব। এটাই আমার প্রধান উদ্দেশ্যে। তাছাড়া তরুণদের জন্য ডিজিটালভাবে নানা ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এর বাইরে আমার নিজের ব্যক্তিগত কোন ইশতেহার নেই। জনগনের চাওয়া পাওয়াই হবে আমার নির্বাচনের ইশতেহার।