shuwrid-20180715141939দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। লোকসানের ধকলে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশই দিতে পারছে না। ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানটির স্থান হয়েছে পঁচা কোম্পানির তালিকায় বা ‘জেড’ গ্রুপে।

এরপরও হঠাৎ করেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই কোম্পানিটির শেয়ারের চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এমনকি শেয়ারের বিক্রেতাও উধাও হয়ে গেছে। ফলে রোববার কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে পারছেন না কোনো বিনিয়োগকারী। যেসব বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার আছে, তাদের কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ১৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এর থেকে ৩০ পয়সা বাড়িয়ে ১৯ টাকা ৮০ পয়সা দরে প্রথমে ৫ হাজার ২৯১ শেয়ার ক্রয়ের আবেদন পড়ে। তবে কেউ এই দামে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।

এরপর ২০ টাকায় এক হাজার শেয়ার ক্রয়ের আবেদন আসে। এ দামেও কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২১ টাকায় ৩০ হাজার ৫৪০টি শেয়ার ক্রয়ের আবেদন পড়ে। এই দামেও কোনো বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে সুহৃদের শেয়ারের বিক্রেতা শূন্যই থেকে গেছে।

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হঠাৎ করে এমন চাহিদা বেড়ে যাওয়া সুহৃদের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৫ সাল থেকেই কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। ২০১৫ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৩ পয়সা। এরপর ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ পয়সায়। আর ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ পয়সা।

এমন লোকসানের কারণে গত তিন বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ফলে ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানির তালিকায় স্থান হয়েছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের। অবশ্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরে অর্থাৎ ২০১৪ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল।

এদিকে সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ীও কোম্পানিটি বড় অঙ্কের লোকসানে রয়েছে। চলতি হিসাব বছরে সুহৃদ ছয় মাসের (২০১৭ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) তথ্য প্রকাশ করেছে। এই ছয় মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে লোকসান হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর শেয়ারপ্রতি এই লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২ পয়সা।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাত্র ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি ৯০ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই।