Legacy-Foot--দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: মাত্র ৮ কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত লিগাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারের দাম প্রায় একশত টাকা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এরপরও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বলে গত এক মাসে একাধিকবার তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে ডিএসইর সেই সতর্কবার্তা লিগাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারের দাম বৃদ্ধির ধারা রোধ করতে পারছে না। উল্টো দাম বাড়ার পালে হাওয়া লেগেছে। এমনকি বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কেনার জন্য কোনো বিক্রেতা পাচ্ছেন না।

যাদের কাছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার আছে তাদের কেউই শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও লিগাসি ফুটওয়্যারে শেয়ারের বিক্রেতা উধাও হয়ে গেছে।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী লিগাসি ফুটওয়্যারের শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ১৫৯ টাকা ৯০ পয়সা দরে। এর থেকে ২ টাকা ৮০ পয়সা কমিয়ে ১৫৭ টাকা ১০ পয়সা দরে প্রথমে ৫ হাজার শেয়ার ক্রয়ের আবেদন পড়ে। তবে কেউ এই দামে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।

এরপর ১৫৭ টাকা ২০ পয়সায় ৫০টি শেয়ার ক্রয়ের আবেদন আসে। এ দামেও কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ১৬৭ টাকা ৫০ পয়সা দামে ২ লাখ ৬২ হাজার ২৬টি শেয়ার ক্রয়ের আবেদন পড়ে। এই দামেও কেউ তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে লিগাসি ফুটওয়্যারের শেয়ার বিক্রেতা শূন্যই থেকে গেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত মে মাস থেকেই লিগাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারের দাম অনেকটা টানা বাড়ছে। আর দুই মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে প্রায় তিনগুণ। এর মধ্যে শেষ ৮ কার্যদিবসেই বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।

মে মাসের ৮ তারিখে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৫৫ টাকা ৬০ পয়সা। যা কয়েক দফা উত্থান-পতনের মাধ্যমে ২৮ জুন লেনদেন শেষে দাঁড়ায় ৭৫ টাকা ৩০ পয়সা। এরপরই অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম। ২৮ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত টানা বেড়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৫৯ টাকা ৯০ পয়সা।

এমন দাম বাড়ার পরও যাদের কাছে লিগাসি ফুটওয়্যারের শেয়ার রয়েছে তারা বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না। অপরদিকে এই দামে শেয়ার কিনতে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। ফলে রোববার লেনদেন শুরুর প্রথম দেড় ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ বেড়ে যায়। কিন্তু বিক্রেতা না থাকায় হল্টেড হয়ে গেছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৩০ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৮০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী, ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৬ দশমিক ১২ শতাংশ আছে বিদেশিদের কাছে।

২০০০ সালে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত লিগাসি ফুটওয়্যারের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৮৯৬টি। ডিএসই কোম্পানিটির লভ্যাংশের বিষয়ে ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ের তথ্য প্রকাশ করেছে।

ওই তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৮ বছরে একবারের জন্যও বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি লিগাসি ফুটওয়্যার। আর ২০১৫ ও ২০১৬ এই দুই বছরে কোনো লভ্যাংশই দেয়নি। লভ্যাংশ দেয়া বছরগুলোর মধ্যে ২০১৭ ও ২০১০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়া হয়। এছাড়া ২০১১ সালে ১২ শতাংশ এবং বাকি তিন বছরে ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেয়া হয়।